পেলেকে শ্রদ্ধা জানাতে ব্যানার নিয়ে মাঠে আসেন নেইমার | ফাইল ছবি |
রিয়াদ ইসলাম: ব্রাজিল হেরে গেছে কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে। কেন হেরেছে, কি করলে জিততো, কে ভালো খেলেছে, কে খারাপ। অনেক কাঁটাছেড়া। চলছে, চলবেও। কিন্তু তাতে বাস্তব পালটাবে না। এই বিশ্বকাপে আর ব্রাজিল ফিরে আসবে না।
অনেকেই বলেন, লাতিন আমেরিকার ফুটবল শেষ। এখন ইউরোপের ফুটবলের যুগ। তা হবে হয়তো। হয়তো ঠিক। আমি লাতিন আমেরিকায় আসছি না। আমি ব্রাজিলে আসি।
ব্রাজিল ক্রোয়েশিয়ার কাছে হারার পর রিও দি জেনেইরো শহরের বস্তির অন্ধগলির বাচ্চাটা হাপুস নয়নে কেঁদেছে। কান্না থামার পর সব ভুলে ও আবার ফুটবলার হওয়ারই স্বপ্ন দেখবে। কারণ ওটা ব্রাজিল। ওখানে মানুষ ফুটবলে বাঁচে। ফুটবলেই স্বপ্ন দেখে।
কখনও শুনেছেন কাউকে বলতে গোল্ডেন জেনারেশন অব ব্রাজিল? শুনবেন না। কারণ ব্রাজিলে যে শিশুটা দু’বেলা খেতে পায় না, সেও দিনের শেষে স্বপ্ন দেখে। একদিন বড় ফুটবলার হয়ে সব কষ্ট মুছে ফেলবে। ফুটবলটা ওখানে অনেকটা জল খাওয়ার মতো। বাঁচতে হলে ফুটবলই খেলতে হবে।
স্পেন। তিকিতাকা। সেই ২০১০। গোল্ডেন জেনারেশন। বিশ্বকাপ। তারপর? উত্তর নেই।
হঠাৎ করে একটা ইংল্যান্ড, একটা ক্রোয়েশিয়া, একটা বেলজিয়াম। ব্রাজিল কিন্তু তা নয়।
ছোটবেলায় ব্রাজিল দেখা শুরু করেছিলাম রোনাল্ডিনহো, রবিনহো, কাকাকে দেখে। এখন সেটা নেইমার, কুটিনহো হয়ে ভিনিসিয়াস, মার্টিনেল্লি। তুলনায় না গেলেও একটা কথা বলাই যায়, শিল্প মরেনি। শিল্প মরতে পারে না। ইউরোপীয় ফুটবলের জয়োল্লাসের দিনেও ব্রাজিল থাকবে ব্রাজিল।
যাঁরা ব্রাজিল হারে ভীষণ খুশি তাঁরাও জানে, যাঁরা ভেঙে পড়েছে তাঁরাও জানে, ব্রাজিল ফিরবেই। কেউ না থাকুক আবারও বিশ্বকাপে হট ফেবারিট হবে এতে কাপ জিতুক বা না জিততে পারুক।
ব্রাজিল ফুটবলের মৃত্যু নাই। কারণ কোন ঘরানা কখনও মরে না। বেঁচে থাকে প্রজন্মের পর প্রজন্মে। যুগের পর যুগ ধরে তৈরি করে সমর্থক। মুগ্ধ করে নিজের শিল্পশৈলীতে।
সেই পেলে থেকে শুরু করে গারিঞ্জা, জিকো, জুজিনহো হয়ে রোমারিও, রিভালদো, রোনালদো, দিনহো, কাকা বা হালের নেইমার-সিলভা ভবিষ্যতের ভিনি-এনড্রিক এমন হাজার হাজার তারকা ব্রাজিল দল আলোকিত করেছিলো, করছে এবং করবে।
আপনি বিশ্বাস করেন বা না করেন,
‘ব্রাজিল ফুটবল একটা নদীর মতো, যে নদীতে কখনও ভাঁটা আসে না।’