নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্ল্যাকার্ড হাতে কর্মসূচি পালন করেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় সাবেক শিক্ষকের গাড়িচাপায় এক নারীর মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতের দাবিতে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে বহিরাগত ও ভারী যান চলাচল বন্ধের দাবি জানান তারা।

আজ শনিবার দুপুরের দিকে এ কর্মসূচি করা হয়।

শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত শিক্ষক আজহার জাফর শাহর ব্যক্তিগত গাড়ির নিচে পড়ে আটকে যান রুবিনা আক্তার নামের এক নারী। পথচারীদের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও আজহার জাফর শাহ ওই অবস্থাতেই গাড়িটি নিয়ে ছুটতে থাকেন।

প্রচণ্ড চাপ ও আঘাতে পিষ্ট হয়ে ওই নারীর মৃত্যু হয়। আজহার জাফর শাহকে গাড়িসহ আটকে উত্তেজিত জনতা গণপিটুনি দেয়, গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় গতকাল গভীর রাতে নিহত রুবিনা আক্তারের পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর ভাই জাকির হোসেন বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। আজহার জাফর শাহকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্যাম্পাসে নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়ে সোচ্চার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র ফেডারেশনের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাবেক শিক্ষার্থী-প্রতিনিধিদের একটি অংশ গতকাল রাতে নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করেছেন। নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতে বিভিন্ন দাবিতে আজ উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের (শিমুল-আদনান)।

নিরাপদ ক্যাম্পাস চেয়ে আজ দুপুরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিভিন্ন দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র রিফাত শাওন। তিনি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন নেতৃত্বাধীন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক।

অবস্থান কর্মসূচিতে রিফাত বলেন, ‘একটা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এত উচ্চগতিতে চলছে, সেই গাড়ির বাম্পারে একজন নারী আটকে আছেন এবং পরে তাঁর মৃত্যু হলো—আমি এটা মেনে নিতে পারছি না।

ক্যাম্পাসের ভেতরে এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের কারণে আমরা শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ। শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনে ক্যাম্পাসটা পার্কের মতো হয়ে যায়, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে পারে না। ক্যাম্পাসে যানবাহন চলাচলের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।’

রিফাত শাওন আরও বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি—নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই। গতকাল একজন এখানে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন, কালকে তো আমাদের কোনো সহপাঠী দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হলে ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে বহিরাগত ও ভারী যান চলাচল বন্ধ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি, তারা যেন এ বিষয়কে একটু ভালোভাবে দেখে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখা তাদের দায়িত্ব। প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ, দয়া করে একবার শিক্ষার্থীদের দিকে তাকান।’