জিতেও গোল দেওয়ায় পিছিয়ে থাকায় বিদায় সুয়ারেজদের

প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায়ের হতাশা সুয়ারেজের চোখে–মুখে | ছবি: রয়টার্স

খেলা ডেস্ক: উরুগুয়ের পথটা বেশ জটিলই ছিল। ঘানার বিপক্ষে জয় তো দরকার ছিলই, পর্তুগালের কাছে দক্ষিণ কোরিয়ার পয়েন্ট হারের প্রার্থনাও করতে হয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া জিতলে নিজেদেরও জিততে হত বড় ব্যবধানে। পুরো ম্যাচজুড়ে তাই বেশি গোল করে এগিয়ে থাকার চাপ ছিল লুইস সুয়ারেজদের ওপর। সেই চাপ সামলে ৩২ মিনিটের মধ্যে দুই গোল দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল উরুগুয়ে। ওদিকে পর্তুগাল-দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচ সমতায় থাকায় কিছুটা স্বস্তিও ছিল।

কিন্তু ৯১ মিনিটের মাথায় দক্ষিণ কোরিয়া ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যেতেই হতাশা নেমে আসে উরুগুয়ে ডাগআউটে। তখনও ম্যাচে বাকি ছিল ৬ মিনিট, পরে যোগ করা সময় হয়ে আসে আরও ১০ মিনিট। এই ১৬ মিনিট আরও ২টি গোল করতে হত উরুগুয়েকে। সেটি আর হয়নি।

ঘানার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জিতেও তাই গোল দেওয়ায় ২ গোল পিছিয়ে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছে উরুগুয়ে। ‘এইচ’ গ্রুপ থেকে শেষ ষোলোয় উঠেছে পর্তুগাল ও দক্ষিণ কোরিয়া।

আল জানুব স্টেডিয়ামে ম্যাচটির শুরুর আগে উরুগুয়ে ছিল জটিল অঙ্কের চক্করে। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র আর পর্তুগালের কাছে ২-০ ব্যবধানে হারায় মাথার ওপর ছিল গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের শঙ্কা। দুই জয়ে আগেই শেষ ষোলোয় জায়গা করে নেয় পর্তুগাল। অপর জায়গার দৌড়ে এগিয়ে ছিল দক্ষিণ কোরিয়াকে ৩-২ গোলে হারানো ঘানা। ১ পয়েন্ট নিয়ে উরুগুয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া ছিল তুলনামূলক পিছিয়ে।

আফ্রিকার দেশটির সামনে না জিতলেও ড্রয়ের মাধ্যমে শেষ ষোলোর পথ খোলা ছিল, তবে সে ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার পয়েন্ট খোয়ানোর দরকার ছিল।

২১ মিনিটে এগিয়ে পেনাল্টি গোলে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগও ছিল ঘানার সামনে। কিন্তু আন্দ্রে আইয়ুর দুর্বল শট চলে যায় উরুগুয়ে গোলকিপার সের্হিও রোচেতের হাতে। এর পাঁচ মিনিট বাদেই গোলের দেখা পেয়ে যায় উরুগুয়ে। বা দিক থেকে সুয়ারেজের শট প্রতিহত করে দিয়েছিলেন ঘানা গোলকিপার লরেন্স আটি-জিগি। তবে পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। কাছে থাকা জর্জিয়ান দি আরাস্তাকায়েতা মাথা ঝুঁকিয়ে বল জালে ঠেলে দেন। এর ছয় মিনিট বাদে উরুগুয়েকে দ্বিতীয় গোলটিও এনে দেন ব্রাজিলিয়ান লিগে খেলা আরাস্তাকায়েতা।

২-০ ব্যবধান নিয়ে বিরতিতে যায় উরুগুয়ে। একই সময়ে চলা অপর ম্যাচে পর্তুগাল-দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচে তখন ১-১ সমতা। শেষ পর্যন্তও দুই ম্যাচের স্কোরলাইন একই থাকলে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যাবে উরুগুয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধের ৬৬ মিনিটে সুয়ারেজতে তুলে এদিনসন কাভানিকে নামান উরুগুয়ে কোচ। ৮০ মিনিটে তুলে নেওয়া হয় দারউইন নুনিয়েজ আর আরাস্তাকায়েতাকেও। এরপরই আসে হতাশার সেই ক্ষণ। নিজেরা আর গোল সংখ্যা বাড়াতে না পারলেও দক্ষিণ কোরিয়া পেয়ে যায় আরেকটি গোল।

আগের দুই ম্যাচে একটিও গোল না করতে পারার ব্যর্থতা উরুগুয়েকে পিছিয়ে দেয় পয়েন্ট তালিকায়। ঘানার কাছে হারলেও ২ গোল করার সুবাদে এগিয়ে যায় দক্ষিণ কোরিয়া। এইচ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকায় ৪ পয়েন্ট থাকলেও তাই উরুগুয়ে তিনে, দক্ষিণ কোরিয়া দুইয়ে।

৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা পর্তুগালের সঙ্গে শেষ ষোলোয় সঙ্গী এশিয়ার দল দক্ষিণ কোরিয়া।