আখেরি মোনাজাতের সময় ইজতেমাস্থল ও এর আশপাশের এলাকায় মানুষের ঢল নামে | ছবি: সংগৃহীত |
প্রতিনিধি সিলেট: সিলেটে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ‘আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’-এর দুই দিনব্যাপী ইজতেমা। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার পারাইচক কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালের ইজতেমা ময়দানে এই মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। তবে সিলেটে আগামীকাল শনিবার বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে জেলা শহরে গণপরিবহন–সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ইজতেমা শেষে বাসসহ অন্য গণপরিহন না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েন দূরদূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিরা।
আজ ভোর থেকে বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয় ইজতেমার দ্বিতীয় ও শেষ দিন। আখেরি মোনাজাতের সময় ইজতেমাস্থল ও এর আশপাশের এলাকায় মানুষের ঢল নামে। আখেরি মোনাজাতের সময় মুসল্লিদের ‘আমিন-আমিন’ ধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে ইজতেমাস্থল। মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি সারা দুনিয়ার সব বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন মুসল্লিরা। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয় দিনব্যাপী এই ইজতেমা।
আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন সিলেটের আলেম ও আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি মাওলানা রশীদুর রহমান ফারুক বর্ণভী। এর আগে ইজতেমার আগের দিন গত বুধবার থেকে সিলেটে আসতে শুরু করেন মুসল্লিরা। গতকাল ভোর থেকে ইজতেমা ময়দান পরিপূর্ণ হয়ে যায়। প্রায় লাখো মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নেন। দুই দিনব্যাপী এ ইজতেমায় ইসলামি জীবনযাপন অনুসরণ ও আত্মশুদ্ধি অর্জন বিষয়ে দেশি-বিদেশি শতাধিক ওলামা-মাশায়েখ ও ইসলামি চিন্তাবিদেরা বয়ান দেন।
মোনাজাত শেষে আশপাশের এলাকার মুসল্লিদের মোটরসাইকেল ও অটোরিকশাসহ ছোট ছোট পরিবহন নিয়ে যেতে দেখা গেছে। তবে গণপরিবহন না পেয়ে অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে গেছেন। ইজতেমায় অংশ নেওয়া সিলেটের গোলাপগঞ্জের আদনান আহমদ বলেন, যাঁরা সিলেটের বাইরে থেকে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকে নিজস্ব ব্যবস্থায় যানবাহন নিয়ে এসেছিলেন। তাই যানবাহন কম ও কিছু এলাকায় ধর্মঘট থাকলেও তাঁদের সমস্যা হয়নি। তবে যাঁরা গণপরিবহনে এসেছিলেন, তাঁরা ফেরার সময় বিপাকে পড়েছেন।
এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে ইজতেমা পিছিয়ে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল। ইজতেমা ঘিরে গোয়েন্দা তথ্যে ‘অপ্রীতিকর ঘটনার’ আশঙ্কা থেকে মঙ্গলবার রাতে সংগঠনটির নেতাদের এ নির্দেশ দিয়েছিল সিলেট মহানগর পুলিশ। তবে পরে ‘আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’-এর নেতারা পুলিশ এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে পূর্বঘোষিত সময়সূচি থেকে কিছুটা এগিয়ে আজ সকাল ১০টার মধ্যে ইজতেমা শেষ করার আশ্বাস দেন।