বরিশাল নগরে মিছিল করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বুধবার সন্ধ্যায় সদর রোডে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি বরিশাল: বরিশাল শহরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেল নিয়ে বিশাল মহড়া দিয়েছেন। এ সময় তাঁরা সদর রোডে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দীর্ঘ সময় অবস্থান করেন। শ্রমিক লীগও নগরে পৃথক মিছিল করেছে। একই সঙ্গে নগরের বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেলে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় এসব ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির নেতাদের দাবি, বরিশালে আগামী ৫ নভেম্বর তাঁদের বিভাগীয় সমাবেশ বানচাল করতে এসব করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, আজ সন্ধ্যার পর মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইস আহমেদের নেতৃত্বে মোটরসাইকেল নিয়ে বিশাল মিছিল বের করা হয়। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ‘হইহই-রইরই বিএনপি গেলি কই’, ‘বিএনপির সন্ত্রাসীরা হুঁশিয়ার-সাবধান’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

মিছিলটি নগরের অশ্বিনী কুমার হলসংলগ্ন নগর ও জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করে। একই সময়ে শ্রমিক লীগের ব্যানারে আরও একটি মিছিল হয় সদর রোডে। এ ছাড়া নগরের ৩০টি ওয়ার্ডে সন্ধ্যার পর মিছিল বের করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইস আহেমদ মান্না বলেন, ‘আমাদের নেত্রী দেশের যুবসমাজকে ঢাকায় মহাসমাবেশে ডেকেছেন। এর অংশ হিসেবে আমরা নগরে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। পাশাপাশি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপির সন্ত্রাসীরা আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালে মহাসমাবেশের নামে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র করছে। সমাবেশে লোকজন আনার জন্য সাধারণ মানুষকে চাপ ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ বরিশাল নগরকে অশান্ত করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। সেটা যাতে করতে না পারে, সে জন্য আমরা রাজপথে থাকব।’

এদিকে সন্ধ্যায় ৬টার দিকে নগরের গির্জা মহল্লা ও কাঠপট্টি এলাকার অন্তত ১০টি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালায় বরিশাল কোতোয়ালি থানার পুলিশ। এ সময় গির্জা মহল্লার হোটেল তাজ থেকে দুই কিশোর-কিশোরীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের অভিভাবকদের খবর দেওয়া হয় বলে জানায় পুলিশ।

কাঠপট্টি ও গির্জা মহল্লার তিনটি হোটেলের ব্যবস্থাপকেরা বলেন, পুলিশ তাঁদের হোটেলে এসে বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালায়। এ সময় এসব আবাসিক হোটেলের রেজিস্ট্রার খাতা খুলে দেখা হয়, হোটেলে কারা উঠেছেন। একই সঙ্গে হোটেলগুলোয় কোনো আগাম বুকিং আছে কি না, তা-ও জানতে চান পুলিশ কর্মকর্তারা।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সগির হোসেন রাতে বলেন, যেসব আবাসিক হোটেলের বিরুদ্ধে ‘অনৈতিক ব্যবসা’য় জড়িত থাকার অভিযোগ আছে, সেগুলোয় অভিযান চালানো হয়েছে। এটা পুলিশের নিয়মিত অভিযান। প্রতি সপ্তাহে এসব হোটেলে অভিযান চালানো হয়। অন্য কোনো উদ্দেশে এ অভিযান চালানো হয়নি।

বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান  বলেন, ‘আমরা এমন আশঙ্কা আগে থেকেই করেছিলাম, সেটা এখন বাস্তবে রূপ পেল। এটা আরও বাড়বে। এমনকি সরকারি দল মহড়ার নামে সংঘাত সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।’