ভারতকে হারিয়ে ‘অঘটন’ ঘটাতে পারলে খুশি হবেন সাকিব

বাংলাদেশের অনুশীলনে সাকিব আল হাসান | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

খেলা ডেস্ক: প্রতিপক্ষ ভারত। তাদের দলে টপ অর্ডারে আছেন লোকেশ রাহুল, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও সূর্যকুমার যাদবের মতো ডাকাবুকো ব্যাটসম্যান। এমন দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে টপ অর্ডারদের ভালো শুরু অনেকটাই বাধ্যতামূলক। স্ট্রাইক রেটও ভালো থাকতে হয়। না হলে জয়ের পুঁজি তোলা কঠিন। 

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের টপ অর্ডারে রান পাওয়া ব্যাটসম্যানদের মধ্যে নাজমুল হোসেনের স্ট্রাইক রেট বেশি (১২৫)। কাল ভারতের মুখোমুখি হওয়ার আগে টপ অর্ডার নিয়ে সাকিবের কোনো দুশ্চিন্তা আছে কি না, অ্যাডিলেডে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নে বাংলাদেশ অধিনায়কের উত্তর, ‘এই বিশ্বকাপে না।’

অ্যাডিলেডে কাল বাংলাদেশ সময় বেলা দুইটায় ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সুপার টুয়েলভে দুটি ম্যাচ জিতেছে সাকিবের দল। ভারতও দুটি ম্যাচ জিতেছে। সেমিফাইনালে ওঠার দৌড়ে এই ম্যাচ দুই দলের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ।

এমন ম্যাচের আগে টপ অর্ডারের স্ট্রাইক রেট নিয়ে কেন দুশ্চিন্তা নেই, তার ব্যাখ্যা দিলেন সাকিব, ‘এই বিশ্বকাপে না। এই বিশ্বকাপে আমাদের লক্ষ্য হলো আমরা দল হিসেবে কতটা ভালো খেলতে পারি। কোনো খেলোয়াড় ধরে আমরা কখনো চিন্তা করিনি এবং সেটা করবও না। আমরা দল হিসেবে কতটা ভালো ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং করতে পারি, সেটাই আমরা সব সময় করার চেষ্টা করব।’

সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের শেষ দুটি ম্যাচ ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। উপমহাদেশের এই দুই প্রতিবেশী দলের ক্রিকেটীয় শক্তি নিয়ে কোনো প্রশ্ন চলে না। সেমিফাইনালে ওঠার দৌড়ে এ দুটি বড় দলই বেশ চাপে আছে। নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে বাংলাদেশ কিংবা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ভারত হেরে গেলে সেমিফাইনালে ওঠার সমীকরণে অনেক যদি-কিন্তুর মধ্যে পড়তে হবে। পাকিস্তানের অবস্থা আরও খারাপ। সেমিফাইনালে ওঠার নাটাই পাকিস্তানের হাতে নেই। শেষ দুই ম্যাচ জিতলেও অন্য ম্যাচের ফলের ওপর নির্ভর করতে হবে বাবর আজমদের।

পরিস্থিতি যখন এমন, তখন বাংলাদেশ দল কী ভাবছে? টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে দুটি জয় তুলে নিয়ে এরই মধ্যে এই সংস্করণে নিজেদের সেরা বিশ্বকাপের দেখা পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। সাকিবদের পরবর্তী লক্ষ্যটা কী?

বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, ‘পরবর্তী লক্ষ্য হলো, দুটো ম্যাচ খুব ভালোভাবে খেলা। দুটো ম্যাচের কোনো ম্যাচও যদি জিততে পারি, সেটা আপসেট (অঘটন) হিসেবে গণ্য হবে। সেই আপসেটটা করতে পারলে আমরা খুশি হব। না করতে পারলে বেশি কিছু বলার নেই। দুই দলই কাগজে-কলমে আমাদের চেয়ে অবশ্যই ভালো। তবে আমরা যদি ভালো খেলি, আমাদের যদি দিন থাকে, তাহলে কেন পারব না। এই বিশ্বকাপেই আমরা দেখেছি, আয়ারল্যান্ড ইংল্যান্ডকে, জিম্বাবুয়ে পাকিস্তানকে হারিয়েছে।’

আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ দল ভারতের বিপক্ষে জিতলে সেটিকে ‘আপসেট’ বলেই মনে করেন সাকিব, ‘আমি আগেও যেমন বলেছি, ভারত ফেবারিট দল। তারা এখানে বিশ্বকাপ জিততে এসেছে। আমরা ফেবারিট নই, বিশ্বকাপ জিততে এখানে আসিনি। আমরা ভালো করেই জানি, ভারতের বিপক্ষে জিতলে এটি আপসেট হবে। আমরা চেষ্টা করব সেরা খেলাটি খেলতে এবং আপসেট ঘটাতে।’

অ্যাডিলেডে খেলার অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের চেয়ে বিস্তর ব্যবধানে এগিয়ে ভারত। সাকিব তাই মনে করেন, ‘দুই দল সাম্যাবস্থানে আছে বলা ঠিক হবে না।’

অ্যাডিলেডের কন্ডিশনও বেশ ঠান্ডা। এর মধ্যে বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাটে উত্তাপ ছড়াতে পারেন ভারতের সূর্যকুমার যাদব। রোহিত, কোহলি ও রাহুলরা থাকতেও গত এক বছরে টি-টোয়েন্টিতে সূর্য নিজের জাতটা ভালোই চিনিয়েছেন। 

সাকিব মনে করেন, ম্যাচটা জিততে হলে ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং অর্ডারকে আগে সামলাতে হবে। সে পরিকল্পনা টিম মিটিংয়ে ঠিক করার কথা জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘গত এক বছরের রেকর্ড চিন্তা করলে সে ভারতের ১ নম্বর ব্যাটসম্যান। তাদের বেশ কয়েকজন বিশ্বমানের খেলোয়াড় রয়েছে, যাদের দিকে নজর রাখতে হবে। আমরা এখনো টিম মিটিং করিনি। মিটিংয়ে আমরা সবকিছু নিয়েই আলোচনা করব। হ্যাঁ, তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিং অর্ডার রয়েছে। ভালো কিছু করতে বা জিততে এটি সামলাতে হবে।’