বিশ্ব শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ‘শিক্ষার পরিবেশ শুধু ইট, কাঠ, বালুর অবকাঠামো দিয়ে হয় না। সেই পরিবেশ শুধু প্রযুক্তি দিয়েও হবে না। শিক্ষকের মনে যদি প্রশান্তি থাকে, উৎসাহ থাকে; তিনি যদি অনুপ্রাণিত বোধ করেন, তাহলেই শিক্ষার পরিবেশ যথার্থ হয়ে উঠবে। সেই জায়গায় পৌঁছাতে চাই।’

বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন। দিবসটি ৫ অক্টোবর হলেও বাংলাদেশে আজ প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে দিনটি উদ্‌যাপন করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের জেলা ও উপজেলায় শোভাযাত্রা এবং আলোচনা সভা হচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আলোচনা সভা হয়েছে। এর আগে সকালে শোভাযাত্রা বের করা হয়। দিবসটি উদ্‌যাপনে সমন্বয়কারীর ভূমিকায় রয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

আলোচনা সভায় শিক্ষকদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা এবং মর্যাদা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষকের কাছ থেকে শুধু প্রত্যাশা করব, শিক্ষকের প্রত্যাশা পূরণ করব না, তাহলে হয় না। শিক্ষকদের যে প্রত্যাশা আছে, তা পূরণেও আমরা আন্তরিক। শিক্ষকের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা এবং তাঁর সম্মান—সব ব্যবস্থা করতে হবে। ভালো কিছু চাইলে ভালো পরিবেশ তৈরি করতে হবে। অবকাঠামো উন্নয়ন করছি, তা যেমন জরুরি, তার চেয়ে আরও বেশি জরুরি শিক্ষার একটি পরিবেশ তৈরি করা।’

দীপু মনি বলেন, তাঁদের আন্তরিকতা আছে। হয়তো অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। সেই সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টাও করছেন।

প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো অনৈতিক কাজে কিছু শিক্ষকের জড়িয়ে পড়ার কথা বলতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাব্যবস্থা থেকে যে আপদগুলো ছিল, সেগুলো দূর করার চেষ্টা করছেন। তার মধ্যে একটি ছিল প্রশ্নপত্র ফাঁস, সেটিও বন্ধ হয়েছে। কিন্তু তারপরও দু-একটা জায়গা, যেখানে হয়তো চেষ্টা হয়, ব্যত্যয় ঘটে—সেখানে কোনো একজন ব্যক্তি বা কয়েকজন ব্যক্তি জড়িত থাকেন। যখন দেখা যায়, তাঁরা কেউ শিক্ষকতার পেশার সঙ্গে জড়িত, তাঁরা কিন্তু সমগ্র শিক্ষকসমাজের প্রতিনিধিত্ব করেন না। কিন্তু সমগ্র শিক্ষকসমাজের মধ্যে একজন, দুজন বা তিনজনও যদি এমন অনৈতিক কাজ করেন, তার দায় কিন্তু সবাইকে নিতে হয়। সে জন্য সবাইকেই খুব সচেতন থাকতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যেহেতু শিক্ষক শেখাবেন, কাজেই তাঁর সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা, সহমর্মিতা ও দৃঢ়চেতা হওয়া ভীষণ জরুরি। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাউন্সেলিংয়ে প্রশিক্ষিত দুজন করে শিক্ষক থাকবেন বলে আশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।

মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. কামাল হোসেন প্রমুখ।