নিজস্ব প্রতিবেদক: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ব্যুরো অব স্পেশাল অপারেশনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফোঁ মিয়াতের নেতৃত্ব বুধবার সেনা সদরদপ্তরে তাঁদের বৈঠক হয়েছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, পারস্পরিক কুশল বিনিময় ছাড়া মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিদল নিজ দেশের পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করেন এবং বন্ধুপ্রতীম দেশ হিসেবে পারস্পরিক সৌহার্দ্য অটুট রেখে নিজ দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছেন বলেও জানান।
এ সময় সেনাপ্রধান দুই দেশের সেনাবাহিনীর সম্পর্ক উন্নয়ন, উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের বিভিন্ন বিষয়–সংক্রান্ত যৌথ আলোচনা, প্রশিক্ষণ বিনিময়, সম্মিলিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, প্রাসঙ্গিক তথ্য বিনিময়সহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদে বলেন, বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকেরা একটি আঞ্চলিক সমস্যা। দীর্ঘদিন তাঁদের স্থান দেওয়ার ফলে সৃষ্ট নিরাপত্তা ঝুঁকিসমূহ দুর করার লক্ষ্যে তিনি দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। মিয়ানমারের প্রতিনিধিরাও নিজ দেশের প্রগতি ও নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান। এ ছাড়াও বাংলাদেশের সঙ্গে মিত্রতা ও অধিকতর যোগাযোগের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো সমাধানে আগ্রহ প্রকাশ করেন তাঁরা।
পরে প্রতিনিধিদল সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিনিময় ও মানোন্নয়নে সহযোগিতা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মোকাবিলার মতো বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করেন।
জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান এ সময় সীমান্ত এলাকায় সামরিক অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন এবং সন্ত্রাসীরা কোনো দেশের পক্ষেই কাজ করেনা বলে মন্তব্য করেন। এ ছাড়া তিনি দুই দেশের সামরিক প্রশিক্ষণ বিনিময়ের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন এবং সীমান্ত এলাকায় শান্তিরক্ষার জন্য উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী একসাথে কাজ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে উভয় সেনাবাহিনীর সম্পর্ক আরও সূদৃঢ় হবে এবং সামরিক বিষয়াদি আরো সহজতর হবে বলে আশা করা যায়।