একুশে ও স্বাধীনতা পদক বেচতে চান নির্মলেন্দু গুণ

কবি নির্মলেন্দু গুণ | ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: চড়ামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার কেনার ক্ষতি পোষাতে ‘একুশে পদক’ ও ‘স্বাধীনতা পদক’ বেচে দেয়ার কথা ভাবছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ।

চেষ্টা করে দীর্ঘদিনেও ঢাকায় নিজের বাড়িতে গ্যাস সংযোগ না পাওয়ায় এমন প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ‘একুশে পদক’ ও ‘স্বাধীনতা পদক’ প্রাপ্ত খ্যাতিমান এ কবি।

মঙ্গলবার দুপুরে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে নির্মলেন্দু গুণ লেখেন, ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক প্রাপ্ত দেশের বিশিষ্ট গুণীজনদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গ্যাস ও বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হোক। রেল এবং বিমানের টিকিটও তাদের জন্য সংরক্ষিত থাকলে ভালো হয়। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার প্রাপকদের এরকম সামান্য বাড়তি সুবিধা তো দেয়া যেতেই পারে। আপনারা কী বলেন?’

তিনি লেখেন, ‘আমি ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে একটি ত্রিতল বাড়ি বানিয়েছি ২০১৬ সালে। বিদ্যুত-সংযোগ পেলেও আজ পর্যন্ত (অক্টোবর ২০২২) আমি বারবার চেষ্টা করেও গ্যাস-সংযোগ পাইনি। ফলে খোলা বাজার থেকে চড়ামূল্যে আমাকে তরল গ্যাস কিনতে হয়। এই ক্ষতি পোষাতে আমি পুরস্কারের সঙ্গে পাওয়া আমার স্বর্ণপদক দুটি বেচে দেয়ার কথা ভাবছি। সরকারকে এক মাস সময় দেয়া হলো।’

স্ট্যাটাসের বিষয়টি নিয়ে  নির্মলেন্দু গুণ বলেন, ‘প্রত্যেকবার আমার গ্যাস কিনতে হয়, বাজারে যেতে হয়, লোক পাঠাতে হয়, তাদের ভাড়া দিতে হয়, আকস্মিকভাবে রাতে গ্যাস শেষ হয়ে গেলে, দরকার পড়লেও কিছু করতে পারছি না, চা খেতে পারছি না… সমস্যা তো হচ্ছে।’

এ জন্য ‘একুশে পদক’ ও ‘স্বাধীনতা পদক’ বেচে দেয়ার বিষয়টি সত্যি সত্যি লিখেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো সিরিয়াসলি… এইসব লেখার মধ্যে একটা রসিকতার টান থাকেই। এর ভেতর থেকে মদ্দা কথা উঠে আসে, কিন্তু লেখার ঢং তো… সবার লেখা তো একই রকম হয় না।’

তবে রাষ্ট্রীয় পদক প্রাপ্তদের নানা সুবিধার কথা রাষ্ট্রের সিরিয়াসলি ভাবা উচিত বলেও মনে করেন কবি।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে আছে যারা রাষ্ট্রীয় পদক প্রাপ্ত হয়, তারা রেলে গেলে একটা টিকিট সে সহজে পায়, তাকে প্রাধান্য দেয়া হয়। বিমানের একটা টিকিট সে সহজে পায়। গ্যাস লাইন, বিদ্যুৎ লাইন এগুলো সে অন্যদের চেয়ে অগ্রাধিকার পায়।

‘তুমি যখন তাকে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার দিয়ে সাধারণ নাগরিকের থেকে আলাদা করেছোই, তাকে আলাদা সুযোগ সুবিধা দাও, এটা তো সুযোগ-সুবিধাও না, আমাদেরকে তো ফ্রি দেয়ার জন্য বলছি না, মাফ করে দাও এরকমও তো বলছি না। আমি বলছি তারা (রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্তরা) যখন নতুন বাড়িঘর তৈরি করবে, যখন যেন বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগটা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পায়। কিন্তু আজকে সাত বছর হতে চললো আমাকে বিদ্যুতের সংযোগ এখনও দেয়নি। টাকাও জমা দেয়া আছে।’

১৯৭০ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রেমাংশুর রক্ত চাই প্রকাশিত হবার পর জনপ্রিয়তা অর্জন করে কবি নির্মলেন্দু গুণ। তাকে ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ২০০১ সালে একুশে পদক এবং ২০১৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হয়।