বাবর–রিজওয়ানের উদ্বোধনী জুটিতে ১০১ রান পায় পাকিস্তান | ছবি: এএফপি

খেলা ডেস্ক: উনিশতম ওভারে সৌম্য সরকারই ম্যাচটি যা জমিয়ে দিলেন।

১২ বলে পাকিস্তানের দরকার ছিল ১৪ রান। ম্যাচে প্রথমবারের মতো বল হাতে নেওয়া সৌম্য ৬ বলে দিলেন ৬ রান, তুলে নিলেন গলার কাঁটা হয়ে থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ানের উইকেটটিও। কিন্তু শেষ ওভারে আর শেষ রক্ষা হয়নি। সাইফউদ্দিনের প্রথম পাঁচ বল থেকে ১১ রান তুলে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করলেন মোহাম্মদ নওয়াজ–আসিফ আলী। বাংলাদেশের ১৭৩ রান ১ বল হাতে রেখে পাকিস্তান টপকে গেল ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজের চার ম্যাচের সব কটিতে হেরে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাচ্ছে সাকিব আল হাসানের দল।

সিরিজের আগের তিন ম্যাচের তুলনায় এদিন ব্যাটিংয়ে ভালো সংগ্রহই গড়েছিল বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান আর লিটন দাসের দুই ফিফটিতে পুঁজি দাঁড়িয়েছিল ৬ উইকেটে ১৭৩ রান।

কিন্তু হ্যাগলি ওভালের পেসবান্ধব পিচে চার পেসার নিয়েও সেই রানে পাকিস্তানকে আটকানো গেল না। বিশেষ করে রিজওয়ান আর বাবর আজমকে।

দুজনে মিলে উদ্বোধনী জুটিতেই তুলে ফেলেন ১০১ রান। আউট করার মতো প্রথম বড় সুযোগ ছিল জুটির ৭৮ রানে, ইনিংসের ১১তম ওভারে।

শরীফুল ইসলামের করা ওভারটিতে চতুর্থ বলে ফাইন লেগে ক্যাচ তুলেছিলেন ৩২ রানে থাকা রিজওয়ান। কিন্তু সহজ ক্যাচটি হাত থেকে ফেলে দেন সাইফউদ্দিন। পরের ওভারেই বোলিং করতে আসেন তিনি।

ক্যাচ–মিসের ‘পাপ’–এর শোধ তুলবেন কি, উল্টো চাপে পড়ে নো, ওয়াইড দিতে শুরু করেন। সুযোগ বুঝে ‘টার্গেট’ করেন বাবর–রিজওয়ানও। তিন চারসহ ওই ওভারেই ১৯ রান দেন সাইফ। পাকিস্তানের দলীয় সংগ্রহও পৌঁছে যায় ১০০ রানে।

তবে পরের ওভারেই উইকেটের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটান হাসান মাহমুদ। ৩ বলের ব্যবধানে জোড়া আঘাতে ফেরান বাবর ও হায়দার আলীকে। আগের ওভারে পঞ্চাশ পূর্ণ করা বাবর হাসানের স্লোয়ারে আকাশে বল তুলে দেন, কিছুটা দৌড়ে ক্যাচ নেন মোসাদ্দেক হোসেন। ৪০ বলে ৫৫ রান করে যান পাকিস্তান অধিনায়ক।

এক বল পরই বোল্ড হন হায়দার। দুই উইকেট নেওয়া ওভারটিতে মাত্র ২ রান দেন হাসান।

কিন্তু উইকেট হাতে থাকায় চাপ নেয়নি পাকিস্তান। তাসকিনের করা পরের ওভার থেকেই সিঙ্গেল–ডাবলস আর অতিরিক্ত মিলিয়ে ১০ রান তুলে নেন রিজওয়ান–নওয়াজ। সাকিব বোলিংয়ে এলে আরও চড়াও হন চারে নামা নওয়াজ, দুই চার এক ছয়ে তুলে নেন ১৭ রান।

শেষ পাঁচ ওভারের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন নেমে আসে ৪৫ রানে। তিন ওভারের মধ্যে ৩১ রান তুলে জয় নাগালেই নিয়ে আসেন রিজওয়ান–নওয়াজ। এর মধ্যে ৪২ বলে ফিফটি পূর্ণ করে নেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা রিজওয়ান।

শেষ দুই ওভারে যখন ১৪ রান দরকার, তখন বল হাতে নিয়ে ম্যাচে কিছুটা উত্তেজনা নিয়ে আসেন সৌম্য। প্রথম দুই বলে দুই করে চার তুলে নেন রিজওয়ান, কিন্তু পরের দুটিই ডট। পঞ্চম বলে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দেন নাজমুলের হাতে। থামে ৫৬ বলে খেলা ৬৯ রানের ইনিংস।

তবে রিজওয়ান থামলেও এক প্রান্তে ছিলেন নওয়াজ। ২০তম ওভারের পঞ্চম বলে জয়ের বাউন্ডারিটি হাঁকান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানই। ২০ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

বাংলাদেশের চার পেসারই চার ওভার করে বোলিং করেছেন। এর মধ্যে দুই উইকেট নেওয়া হাসানই কেবল ওভারপ্রতি রানখরচ ৭–এর নিচে রাখতে পেরেছেন (২৭ রান)। বাকিদের মধ্যে তাসকিন ৩২, শরীফুল ৩০ রান দিয়ে উইকেটশূন্য। সবচেয়ে বেশি ৫৩ রান দিয়েছেন ক্যাচ মিস করা সাইফউদ্দিন।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ যথারীতি দ্রুতই দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলে। ৪ বলে ৪ রান করে সৌম্য, আর ১৫ বলে ১২ রান করে নাজমুল হোসেন আউট হওয়ার সময় দলের স্কোর ছিল ৪১ রান।

সেখান থেকে তৃতীয় উইকেটে ৮৮ রানের জুটি গড়েন সাকিব ও লিটন। ফিফটিও তুলে নেন দুজনই। ৪২ বল খেলে লিটন ৬৯, সমান বল খেলে সাকিব ৬৮ রান করেন। বাংলাদেশ ইনিংসের বাকি ৩৬ বল থেকে আসে ৩১ রান, অতিরিক্ত থেকে ৫।

পাকিস্তানের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন নাসিম শাহ ও মোহাম্মদ ওয়াসিম।