ফারজানা খাতুন | ছবি: সংগৃহীত
প্রতিনিধি নাটোর: এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে দুপুরে বাড়ি থেকে হাসিমুখে বের হয়েছিল পরীক্ষার্থী ফারজানা খাতুন (১৬)। পরীক্ষা শেষে বন্ধুদের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত ভ্যানে সে বাড়ি ফিরছিল। তবে বাড়ির খুব কাছাকাছি এসেও বাড়িতে ফেরা হয়নি। পথে ভ্যানটি উল্টে গুরুতর আহত হয় ফারজানা। পরে সন্ধ্যায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার বিকেলে নাটোরের সিংড়া উপজেলার বিলদহর-নাছিয়ারকান্দি বেড়িবাঁধ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফারজানা সিংড়ার কালীনগর গ্রামের ওমর ফারুকের মেয়ে। সে নুরপুর উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।

পুলিশ ও নিহত ফারজানার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে বাড়ি থেকে বের হওয়া সময় ফারজানা বাড়িতে বলে, পরীক্ষা শেষে সে বান্ধবীদের সঙ্গে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে বাড়ি ফিরবে। বিকেলে পরীক্ষা শেষে ফারজানা তার কয়েক বান্ধবীকে নিয়ে ভ্যানে চড়ে ঘোরাঘুরি করছিল। পরে তারা বিলদহর-নাছিয়ারকান্দি বেড়িবাঁধ হয়ে বাড়ি ফিরছিল। বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছানোর পর সরু সড়কে অন্য একটি ভ্যানকে জায়গা দিতে গিয়ে ফারজানাদের বহনকারী ভ্যানটি সড়কের নিচে উল্টে যায়। এতে ফারজানা ও এর চালক ভ্যানের নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন।

ফারজানার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য নাটোর সদর হাসপাতালের নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আহত চালককে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ভ্যানে থাকা তিন ছাত্রী সামান্য আহত হয়েছে। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছে।

দুর্ঘটনাকবলিত ভ্যানে থাকা ফারজানার সহপাঠী তন্নিমা খাতুন বলে, বেড়িবাঁধ দিয়ে ফেরার পথে তাদের বহনকারী ভ্যানটি অপর একটি ভ্যানকে জায়গা দিতে গিয়ে উল্টে যায়। এ সময় ফারজানা ভ্যানের নিচে চাপা পড়ে।

ফারজানার বাবা ওমর ফারুক বলেন, ‘আমার তিন সন্তানের মধ্যে ফারজানা বড়। দর্জির কাজ করে অনেক কষ্টে সন্তানদের পড়াশোনা করাচ্ছি। মেয়েটা হাসতে হাসতে বাড়ি থেকে বের হলো। মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর লাশ হয়ে ফিরল।’

সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনায় এক এসএসএসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর তিনি পেয়েছেন। তবে এ বিষয়ে নিহত ফারজানার পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই।