বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন | ফাইল ছবি |
নিজস্ব প্রতিবেদক: পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ায়নি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বিদ্যুৎ কেনার যথাযথ তথ্য না পাওয়া ও অস্বচ্ছতার কারণে মূল্যায়ন করতে না পারায় মূল্য বৃদ্ধির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কমিশন। তাই বিদ্যুতের আগের দাম অপরিবর্তিত থাকছে।
বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের বিপরীতে বৃহস্পতিবার অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ আদেশ ঘোষণা করেছে বিইআরসি। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান আবদুল জলিল বলেন, সরকার ১৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। এটি দিয়ে পিডিবি ঘাটতি সমন্বয় করতে পারছে। এসব বিবেচনা করেই কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিইআরসির সদস্য মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী, আ ব ম ফারুক, মোহাম্মদ বজলুর রহমান ও মো. কামরুজ্জামান।
এর আগে পিডিবি গড়ে ৬৬ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিলে তা নিয়ে গত ১৮ মে শুনানি করে বিইআরসি। এতে ভর্তুকি ছাড়া ৫৮ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় বিইআরসি গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। যদিও ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা দাম বাড়ানোর বিরোধিতা করেন শুনানিতে।
শুনানির পরবর্তী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে আদেশ ঘোষণার আইনি বাধ্যবাধকতা আছে। এ সময় সীমা শেষ হওয়ার দিনই সিদ্ধান্ত জানাল বিইআরসি। এর আগে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিরোধিতা করে ১৩ জুলাই বিইআরসিতে একটি চিঠি দিয়েছে ক্যাব। এতে বলা হয়, জ্বালানি খরচ কমিয়ে ভোক্তা পর্যায়ে লোডশেডিং করা হচ্ছে। আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর কথা থাকলেও এখন উৎপাদন হচ্ছে আগের চেয়ে কম। এতে জ্বালানি তেল ও এলএনজি আমদানির অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। তাই দাম বাড়ানোর প্রস্তাব এখন আর যৌক্তিক নয়।
গত এক যুগে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৯ বার। এ সময় পাইকারি পর্যায়ে ১১৮ শতাংশ ও গ্রাহক পর্যায়ে ৯০ শতাংশ বেড়েছে বিদ্যুতে দাম। সবশেষ দাম বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যা ওই বছরের মার্চ থেকে কার্যকর হয়। ওই সময় পাইকারি পর্যায়ে ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ বাড়ানো হয় দাম। একই সময়ে খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ানো হয় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
এদিকে জুনে গড়ে ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয় গ্যাসের দাম। এরপর চলমান লোডশেডিংয়ের মধ্যেই ৬ আগস্ট থেকে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। ডিজেলে সাড়ে ৪২ শতাংশ এবং পেট্রল-অকটেনের দাম বাড়ানো হয়েছে ৫১ শতাংশ। এরপর ব্যাপক সমালোচনার মুখে এক মাসের মাথায় লিটারপ্রতি ৫ টাকা কমানো হয় জ্বালানি তেলের দাম।