সড়কজুড়ে ইজিবাইকের লাইন। এর মধ্যে সড়ক বিভাজনের কাজ চলছে। রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: মেহেদী হাসানের ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। লিখিত পরীক্ষা হয়ে গেছে, এখন হচ্ছে ব্যবহারিক পরীক্ষা। মেহেদীর ছেলের কেন্দ্র পড়েছে লক্ষ্মীপুর বালিকা বিদ্যালয়ে। গত সোমবার বিকেলে মেহেদী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘ইজিবাইকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ গেট থেকে লক্ষ্মীপুর বালিকা বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে ২২ মিনিট লেগে যায়। অথচ রাস্তা ফাঁকা থাকলে এক মিনিটে যাওয়া যায়।’

শুধু মেহেদী নন, রাজশাহী নগরের লক্ষ্মীপুর এলাকা দিয়ে চলাচলকারী সবাই এখন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। লক্ষ্মীপুর স্থানীয়ভাবে হাসপাতাল পাড়া বলে পরিচিত। স্থানীয় লোকজন বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শুরু করে নগরের সিংহভাগ বেসরকারি হাসপাতাল ও রোগনির্ণয় কেন্দ্র গড়ে উঠেছে এই এলাকায়। দুটি ছাড়া বেসরকারি হাসপাতালগুলোর পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। এই এলাকার ফুটপাত বেদখল হয়ে গেছে বহুদিন আগেই। রাস্তার একাংশ দখল করে থাকে ভাড়ার অ্যাম্বুলেন্স ও মাইক্রোবাস। এর মধ্যে সড়ক বিভাজনের কাজ চলছে। ফলে নির্মাণসামগ্রীর ট্রাক আসছে-যাচ্ছে। অনেক ট্রাক আবার মাল নামানোর সময় সড়ক দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় লক্ষ্মীপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঝাউতলার মোড় থেকে রোগী নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভিড়ের কারণে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রাস্তায় আসতে পারছে না। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ননদ আমেনা বেগমকে নিয়ে হেঁটে আসছেন সালমা বেগম। তাঁদের বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিয়ান এলাকায়। সালমা বলেন, রাস্তায় অনেক যানজট। এ জন্য ননদকে নিয়ে রিকশা থেকে নেমে হেঁটে যাচ্ছেন। ননদের পায়ের ব্যথা। তাঁর চিকিৎসার জন্য এসে এ বিপদে পড়লেন।

নগরের লক্ষ্মীপুর বালিকা বিদ্যালয়ের কাছে গিয়ে দেখা যায়, সড়ক বিভাজকের সৌন্দর্যবর্ধনের মালামাল নামানো হচ্ছে একটি ট্রাক থেকে। ট্রাকটি সড়কের অর্ধেকের বেশি দখল করে নিয়েছে। এ জন্য এসএসসি পরীক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। গতকাল রসায়ন বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা ছিল। বিদ্যালয়ের নির্ধারিত পোশাক পরা কিছু শিক্ষার্থীকে যানবাহনের ফাঁক দিয়ে দৌড়াতে দেখা যায়।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম বলেন, তাঁদের নিয়ম রয়েছে যে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নগরে ট্রাক ঢুকতে পারবে না। বিষয়টি ট্রাফিক পুলিশের দেখার দায়িত্ব। ট্রাক টার্মিনাল বানানো হয়েছিল, সেখানে কোনো ট্রাক যায় না। এখন এই মাইক্রোবাস বা অ্যাম্বুলেন্সের জন্য বিকল্প জায়গা করলেও তারা সেখানে যাবে বলে মনে হয় না।

রাজশাহী মহানগর ট্রাফিক পুলিশের উপকমিশনার অনির্বাণ চাকমা বলেন, ওখানে সিটি করপোরেশনের উন্নয়নকাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের ট্রাক মালামাল নিয়ে আসছে। ট্রাক ঢুকতে না দিলে উন্নয়নকাজটা আরও বিলম্বিত হবে। দুর্ভোগও বাড়বে। এ জন্য করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করেন।