বেশ কিছুদিন ধরেই সুইজার‌ল্যান্ডের পেনশনব্যবস্থা সংস্কারের দাবি উঠেছিল | ফাইল ছবি: রয়টার্স

পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক: পেনশন সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে সুইজার‌ল্যান্ডের পুরুষেরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস (ইসিএইচআর) সম্প্রতি এমন অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। এ অবস্থায় সুইজার‌ল্যান্ডের সরকারকে পেনশন আইন সংস্কার করতে বলা হয়েছে। ফলে পেনশন সুবিধাবঞ্চিত পুরুষদের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ গুণতে হতে পারে সুইস সরকারকে। খবর বিবিসির

সুইজার‌ল্যান্ডের প্রচলিত আইন অনুযায়ী স্বামী মারা যাওয়ার পর স্ত্রী আজীবন পেনশন সুবিধা পেতেন। কিন্তু স্ত্রী মারা যাওয়ার পর স্বামী এ সুবিধা পেতেন না। তবে সন্তান থাকলে তাঁর ১৮ বছর হওয়া পর্যন্ত এ সুবিধা পেতেন স্বামী।

সম্প্রতি ম্যাক্স বিলার নামের এক ব্যক্তি স্থানীয় আদালতে হেরে যাওয়ার পর ইসিএইচআরে অভিযোগ করেন। ফ্রান্সে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালত সুইজার‌ল্যান্ডের প্রচলিত পেনশন আইনের বিরুদ্ধে এ রায় দিল।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯০ সালে ম্যাক্স বিলারের স্ত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। স্ত্রীকে হারানোর পর সন্তান লালন-পালনের জন্য চাকরি ছেড়ে দেন ম্যাক্স। চাকরি ছাড়ার পর স্ত্রীর পেনশন বাবদ যে অর্থ পেতেন তা দুই সন্তানের পেছনে খরচ করতেন। কিন্তু ২০১০ সালে সন্তানদের বয়স ১৮ বছর হওয়ায় পেনশন সুবিধা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।

সুইজার‌ল্যান্ডের আইন অনুযায়ী ম্যাক্স বিলার নারী হলে আজীবন এই পেনশন সুবিধা পেতেন, সন্তান থাকুক কিংবা না থাকুক। দীর্ঘদিন আগে চাকরি ছেড়ে দেওয়া ম্যাক্স স্ত্রীর পেনশনের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ এই সুবিধা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন। তাই বাধ্য হয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নামে তিনি।

কিন্তু স্থানীয় আদালতে মামলায় হেরে যান ম্যাক্স বিলার। এরপর অভিযোগ নিয়ে ইসিএইচআরে যান তিনি। সেখান দীর্ঘ যুক্তিতর্কের পর অবশেষে ম্যাক্স প্রমাণ করতে সক্ষম হন যে, তিনি বৈষম্যে শিকার হয়েছেন।

রায়ে ইসিএইচআর বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারীর ভূমিকা আগের চেয়ে বদলে গেছে। কিন্তু সুইজার‌ল্যান্ডের বিদ্যমান পেনশন আইন ইউরোপিয়ান মানবাধিকার কনভেনশনের ১৪ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এতে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন পুরুষ।

এ রায়ের ফলে ম্যাক্স বিলার এখন থেকে পেনশন সুবিধা পাবেন। এতদিন ধরে বঞ্চিত অন্য পুরুষেরাও এই সুবিধা পেতে আবেদন করতে পারবেন।