মধুমতী সেতু | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বাসস, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সোমবার নড়াইলে ছয় লেনের মধুমতী সেতু এবং নারায়ণগঞ্জে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু উদ্বোধন করেছেন।
শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুগুলো উদ্বোধন করে বলেন, সেতুগুলো ভ্রমণের সময় কমিয়ে সড়ক যোগাযোগকে আরও সহজ, দ্রুত ও সহজলভ্য করার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে চাঙা করতে সহায়তা করবে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে ৯৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে মধুমতী নদীর ওপর ৬৯০ মিটার দীর্ঘ মধুমতী সেতু নির্মিত হয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে কালনা সেতু নামে পরিচিত। এটি নড়াইল, গোপালগঞ্জ, খুলনা, মাগুরা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও ঝিনাইদহ জেলাকে সংযুক্ত করেছে।
প্রকল্প কর্মকর্তাদের মতে, সেতুটি চালু হওয়ার মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ দ্রুত সড়ক যোগাযোগ–সুবিধা পাবেন। এর ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ১০টি জেলার মানুষ কম সময়ে বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতে পারবেন। এটি দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর যশোরের বেনাপোল থেকে ঢাকা পর্যন্ত ভ্রমণের সময়ও কমিয়ে আনবে।
২৭ দশমিক ১ মিটার চওড়া সেতুটিতে চারটি উচ্চগতির লেন ৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং দুটি সার্ভিস লেনসহ ছয়টি লেন রয়েছে।
তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুটি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমানের নামে নামকরণ করা হয়েছে। এটি নারায়ণগঞ্জ শহরকে বন্দর উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত করবে। ১ দশমিক ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলগামী যানবাহন এবং একইভাবে চট্টগ্রাম থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী যানবাহন যানজট এড়াতে ও সময় বাঁচাতে নারায়ণগঞ্জ শহরকে বাইপাস করতে সক্ষম করবে। সেতুটির সঙ্গে নতুন সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে উঠলে পদ্মা সেতু থেকে জনগণ সর্বোচ্চ সুবিধা পাবেন।
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা সেতু | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
এই সেতু প্রকল্প ২০১০ সালে একনেকে অনুমোদন পেলেও ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি নির্মাণকাজ শুরু হয়। সেতু নির্মাণে ৬০৮ দশমিক ৫৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। এর মধ্যে ২৬৩ দশমিক ৩৬ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে এবং ৩৪৫ দশমিক ২০ কোটি টাকা সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) থেকে এসেছে।
ওয়াকওয়েসহ সেতুটিতে ৩৮টি স্প্যান রয়েছে। এরমধ্যে ৫টি স্প্যান নদীতে এবং ৩৩টি সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে। হাঁটার পথসহ সেতুটির প্রস্থ ২২ দশমিক ১৫ মিটার। এ ছাড়া ছয় লেনের টোল প্লাজা এবং দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়কও নির্মাণ করা হচ্ছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি এবং সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসেফ ইসা আল দুহাইলানও বক্তব্য দেন।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী সেতু দুটির ওপর সংক্ষেপে বর্ণনা দেন। পরে সেতু প্রকল্পগুলোর ওপর ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।