কিয়েভসহ অনেক শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, রাশিয়ার বিরুদ্ধে বদলার হুমকি ইউক্রেনের

কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত ব্যক্তিদের একজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাচ্ছেন জরুরি সেবা বিভাগের কর্মীরা | ছবি: রয়টার্স

পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক:  ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় বলছে, দেশটির রাজধানী কিয়েভসহ অনেক ইউক্রেনীয় শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। আজ সোমবার হওয়া এসব হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযোগকারী সেতুতে বিস্ফোরণের জন্য মস্কো ইউক্রেনকে দায়ী করার এক দিন পরই এসব হামলা হলো। এদিকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা এ ঘটনার বদলা নেবে। খবর এএফপি ও রয়টার্সের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের উপপ্রধান কিরিলো টিমোশেনকো বলেন, ‘ইউক্রেন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখে পড়েছে। আমাদের দেশের অনেক শহরে হামলা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।’ দেশের জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

এএফপির প্রতিনিধিদের ভাষ্য, আজ ইউক্রেনের স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে কিয়েভে বেশ কয়েকটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন তাঁরা।
এর আগে গত ২৪ জুন রাশিয়া কিয়েভে সর্বশেষ হামলাটি চালিয়েছিল।

কিয়েভে নিযুক্ত এএফপির সংবাদকর্মীদের একজন বলেন, শিশুদের খেলার জায়গার কাছে একটি ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে। সেখানে বড় একটি গর্তের সৃষ্টি হয় এবং সেখান থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকো বলেন, ‘রাজধানী শহর রুশ সন্ত্রাসীদের হামলার কবলে পড়েছে।’ শহরটির কেন্দ্রস্থলে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কিয়েভের মেয়র আরও বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজন না থাকলে আজ শহরটিতে না যাওয়াই ভালো। শহরের উপকণ্ঠের বাসিন্দাদের আমি বলব, তাঁরা যেন আজ রাজধানীতে না যান।’

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, আজ সকালে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে হওয়া ‘রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা’র বদলা নেবে তারা।

মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘শত্রুরা আমাদের ভূমিতে যেসব যন্ত্রণা ও মৃত্যু ডেকে এনেছে, তার জন্য তাদের শাস্তি পেতে হবে। আমরা বদলা নেব।’

ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবাও এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এক টুইটার পোস্টে তিনি বলেন, আজ ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

ইউক্রেনের শান্তিপূর্ণ শহরগুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোটা পুতিনের একমাত্র যুদ্ধ কৌশল। তবে তিনি ইউক্রেনীয়দের মনোবল ভেঙে দিতে পারবেন না। যাঁরা তাঁর কাছে শান্তির বার্তা নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের সবার প্রতিই এটি তাঁর জবাব। পুতিন হলেন এমন সন্ত্রাসী, যিনি  ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার মধ্য দিয়ে কথা বলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনের চারপাশে বিমান হামলাজনিত সতর্কসংকেত কমছে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। দয়া করে নিরাপদ আশ্রয়ের জায়গাগুলো থেকে সরে যাবেন না।’ জেলেনস্কি আরও বলেছেন, রাশিয়া পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ইউক্রেনকে সরিয়ে দিতে চাইছে।

ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযোগকারী কার্চ সেতুতে বিস্ফোরণের জন্য মস্কো ইউক্রেনকে দায়ী করার এক দিন পরই এসব হামলা হলো। গত শনিবার সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়। গতকাল রোববার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বলে উল্লেখ করেন।

ইতিমধ্যে বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ বার্তা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী গতকাল এ কমিটির প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের গোয়েন্দা বাহিনীর পরিকল্পনা, অংশগ্রহণ ও পৃষ্ঠপোষকতায় এই হামলা হয়েছে।