|
ইপিজেডের একটি কারখানায় কাজ করছেন শ্রমিকরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন
|
প্রতিনিধি ঈশ্বরদী: পাবনার ঈশ্বরদী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) স্থাপিত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট ২০ কোটি ৯১ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা বাংলাদেশের ১ হাজার ৯৯১ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো (প্রতি ডলার ৯৫ টাকা ধরে)। সর্বশেষ অর্থবছরের এই আয় তার আগের অর্থবছরের তুলনায় ৩০ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেশি।
ইপিজেডগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বেপজা) জানিয়েছে, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ঈশ্বরদী ইপিজেড থেকে মোট ২০৯ দশমিক ০৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পণ্যসামগ্রী রপ্তানি হয়। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৫৯ দশমিক ৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১২৫ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৫০ দশমিক ২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৩১ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। পরিসংখ্যান অনুযায়ী আগের বছরগুলোর তুলনায় গত অর্থবছরে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
|
ঈশ্বরদী ইপিজেডের প্রবেশপথ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বেপজা জানায়, দেশের ৮টি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) মধ্যে এ ইপিজেডের অবস্থান সপ্তম। বর্তমানে ঈশ্বরদী ইপিজেডে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে মোট ২১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। বাস্তবায়নাধীন রয়েছে ১৫টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এ ইপিজেডে সমস্ত প্লটই ইতোমধ্যে চাহিদা অনুযায়ী বিনিয়োগকারীদের মাঝে বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত নতুন দুটি কারখানা ঈশ্বরদী ইপিজেডে চালু হয়েছে। দেশি কোম্পানি ছাড়াও কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, চীন, তাইওয়ান, কোরিয়া, পাকিস্তান, ভারত, ইতালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোম্পানি এই ইপিজেডে তাঁদের কারখানা গড়ে তুলেছে।
সূত্র আরও জানায়, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ঈশ্বরদী ইপিজেডে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীর সংখ্যা ১৬ হাজার ২৭৮ জন। এর মধ্যে নারী ১১ হাজার ৮৫৪ ও পুরুষ শ্রমিকের সংখ্যা ৪ হাজার ৪২৪ জন। গত অর্থবছরে ঈশ্বরদীতে নতুন করে ৩ হাজার জনের কাজের সুযোগ হয়েছে। এখানে পুরুষের চেয়ে নারী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, ‘ইপিজেডের কারণে ঈশ্বরদী জনগুরুত্বপূর্ণ অগ্রসর একটি উপজেলা। এখানে প্রায় ১৬ হাজার মানুষ কাজ করে। যার বেশিরভাগই মেয়ে। এখানকার মানুষেরা কর্মব্যস্ত বেশি। ফলে নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পেয়েছে, পারিবারিক কলহ কমেছে। সবদিক বিবেচনা করলে ঈশ্বরদীর অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি ইপিজেড।’
বেপজার নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) নাজমা বিন্তে আলমগীর বলেন, ‘গত দুই বছরে কোভিড-১৯ মহামারি, ক্রয়াদেশ বাতিল ও আদেশের ঘাটতিসহ বিভিন্ন সমস্যা সত্ত্বেও ঈশ্বরদী ইপিজেডে অবস্থিত শিল্পগুলো দুর্দান্তভাবে ফিরে এসেছে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি শ্রমবান্ধব পরিস্থিতি তৈরির কারণে ঈশ্বরদী ইপিজেডে রপ্তানি, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে সাফল্য এসেছে। আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ক্রেতাদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করতে পেরেছি।’
জানতে চাইলে বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বলেন, ‘প্রবৃদ্ধির পেছনের কারণ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকারের দূরদর্শী ও বিনিয়োগবান্ধব নীতি এবং প্রণোদনা। এছাড়া বেপজার দক্ষতা, নিষ্ঠা ও ইপিজেডের অভ্যন্তরে ব্যবসা করার সহজতাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ঈশ্বরদী ইপিজেডে বিনিয়োগ, শ্রম এবং পরিবেশবান্ধব করার চেষ্টা করছি। এছাড়া এ অঞ্চলের মানুষ কঠোর পরিশ্রমী হওয়ায় এটি আরও বেড়েছে।’
|
ঈশ্বরদী ইপিজেডে কর্মরত শ্রমিকরা দলবেঁধেই কর্মস্থলে যোগ দিচ্ছেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |