রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন লাল বানু | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি বাগমারা: ‘মাইক’ প্রতীক নিয়ে চারবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন রাজশাহীর বাগমারার লাল বানু (৫৪)। প্রতীকের কারণে নিজের নামটিই যেন বদলে গেছে। অনেকেই এখন তাঁকে ডাকেন ‘মাইক আপা’। লাল বানুও বিষয়টি হাসিমুখে মেনে নেন।

এবার রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে (মোহনপুর, দুর্গাপুর ও বাগমারা) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের সদস্য প্রার্থী হয়েছেন লাল বানু। ১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেও তিনি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মাইক প্রতীকে তিনটি নির্বাচন পার করেছেন। তবে একবারও তিনি বিজয়ী হতে পারেননি।

বাগমারা উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থী লাল বানুর জন্য কমিশন মাইক প্রতীক দিয়েছে। এটা কয়েক বছর ধরে চলে আসছে। প্রার্থীরা পছন্দ করে প্রতীক নির্বাচিত করেন। একই প্রতীক একাধিক প্রার্থীর পছন্দের তালিকায় থাকলে লটারির মাধ্যমে এর সুরাহা করা হয়। তবে লাল বানুর পছন্দের মাইক প্রতীকের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না।

বাগমারা উপজেলার গণিপুর ইউনিয়নের চকমহব্বতপুর গ্রামের বাসিন্দা লাল বানু ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত গণিপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রথমে প্রার্থী হন। ওই নির্বাচনে তিনি মাইক প্রতীক নিয়ে ইউপির সংরক্ষিত-৩ (৭, ৮ ও ৯) নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে নির্বাচনের ফলাফল তাঁর পক্ষে আসেনি, তবে লাল বানু হাল ছাড়েননি। পরে একই বছর অনুষ্ঠিত প্রথম জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হয়েছিলেন লাল বানু। ওই ওয়ার্ড থেকে আরও তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ওই নির্বাচনেও লাল বানু তাঁর পছন্দের প্রতীক মাইক পেয়েছিলেন। তবে ওই নির্বাচনেও লাল বানু পরাজিত হন।

এদিকে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত গণিপুর ইউপি নির্বাচনে আবার একই ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। নির্বাচনের পরিধি পরিবর্তন হলেও নিজের প্রতীক বদলাননি তিনি। তবে প্রতীকের মতো ভাগ্যও বদল হয়নি তাঁর। ওই নির্বাচনেও হেরে গেছেন লাল বানু। পূর্বের ন্যায় হাল ছাড়েননি এই নারী প্রার্থী।

ওই নির্বাচনের আট মাস পর এবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনের সদস্য প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন লাল বানু। তবে তিনি নিজের পছন্দের প্রতীক ঠিক রেখেছেন।

একই প্রতীকে বারবার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রসঙ্গে লাল বানু বলেন, মাইক প্রতীকটি তাঁর পছন্দের। যদিও এই প্রতীকে এখনো বিজয়ী হতে পারেননি। তবে এ নিয়ে তাঁর কোনো আফসোস নেই। প্রতিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা তাঁকে সম্মান দেখিয়ে কেউ মাইক প্রতীকটি তাঁদের পছন্দের তালিকায় রাখেন না। এই কারণে লটারি ছাড়াই তিনি এই প্রতীক পান।

ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে লাল বানু বলেন, ভবিষ্যতেও তিনি মাইক প্রতীকেই নির্বাচন করবেন। কারণ, এই প্রতীক তাঁর নামের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। লোকজন তাঁকে ‘মাইক আপা’ বলে ডাকলে খারাপ লাগে না। এবারের নির্বাচনে তিনি মাইক প্রতীক নিয়েই বিজয়ী হবেন বলে আশা করছেন।

গণিপুর ইউনিয়ন থেকে টানা তিনবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বলেন, একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা হওয়ায় এবার তিনি জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার। লাল বানু তাঁর কাছ থেকে মাইক প্রতীকেই ভোট চেয়েছেন। চারবার পরাজিত হলেও লাল বানুকে নিজের লক্ষ্যে অটুট থাকার জন্য শুভকামনা জানান তিনি।