ট্রান্সফরমার | ফাইল ছবি

প্রতিনিধি জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের আক্কেলপুর ও ক্ষেতলাল উপজেলায় দুই দিনে গভীর ও অগভীর নলকূপ চালানোর জন্য স্থাপিত বিদ্যুতের সাতটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এর মধ্যে আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের মারমা ও ঘোলকুড়ি এলাকা থেকে চারটি এবং ক্ষেতলাল উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের জিয়াপুর এলাকা থেকে তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। গত মাসে জেলায় ১৪টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়।

জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আক্কেলপুর আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১ অক্টোবর রাতে ক্ষেতলাল উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের জিয়াপুর গ্রামের ফসলি জমির মাঠে শামছুল আলমের গভীর নলকূপ চালানোর জন্য স্থাপিত তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। ২ অক্টোবর আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের মারমা গ্রামের ফসলি মাঠের আমিনুল ইসলামের গভীর নলকূপের তিনটি ট্রান্সফরমার ও পাশের ঘোলকুড়ি মাঠের আবদুর রাজ্জাকের অগভীর নলকূপের একটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। ৩টি ট্রান্সফরমারের প্রতিটি ১০ কেভির। একেকটি ট্রান্সফরমারের দাম ৬০ হাজার টাকা। ৩টি ট্রান্সফরমার কিনতে গভীর নলকূপের মালিকদের ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা গুনতে হবে। অগভীর নলকূপের ৫ কেভির একটি ট্রান্সফরমারের দাম ৩৮ হাজার টাকা।

মারমা এলাকার গভীর নলকূপের মালিক আমিনুল ইসলাম বলেন, গত রোববার রাতে গভীর নলকূপের ঘরে পাহারা ছিল না। গতকাল সকালে কৃষকেরা মাঠে গিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির ট্রান্সফরমার দেখতে পাননি। তাঁরা গভীর নলকূপের ঘরের কাছে গিয়ে ট্রান্সফরমারের বোতল ভাঙা ও এলোমেলো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে খবর দেন। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে গেছে।

ঘোলকুড়ি মাঠের অগভীর নলকূপের মালিক আবদুর রাজ্জাক বলেন, রোববার রাতে তাঁর অগভীর নলকূপের পাঁচ কেভির ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। সামনে সেচ মৌসুম, এখন কীভাবে ট্রান্সফরমার কিনবেন, তা নিয়ে চিন্তায় আছেন।

রাত ১১টা পর্যন্ত গভীর নলকূপের ঘরে পাহারা দিয়েছেন বলে জানান জিয়াপুর গ্রামের গভীর নলকূপের মালিক শামছুল আলম। তিনি বলেন, পরদিন সকালে জানতে পারেন তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। ট্রান্সফরমার চুরি কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবারও তা বেড়ে গেছে। এতে গভীর-অগভীর নলকূপের মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আক্কেলপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আবদুর রহমান বলেন, আক্কেলপুর ও ক্ষেতলালে দুই দিনের ব্যবধানে দুটি গভীর নলকূপ, একটি অগভীর নলকূপের মোট সাতটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় সমিতির পক্ষে থানায় এজাহার দেওয়া আছে। ১০ কেভির প্রতিটি ট্রান্সফরমারের দাম ৬০ থেকে ৬২ হাজার টাকা।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বরে জেলায় ১৪টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এর মধ্যে জয়পুরহাট সদরে চারটি, পাঁচবিবিতে ছয়টি, ক্ষেতলালে তিনটি, কালাইয়ে একটি। চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের মধ্যে ১০ কেভির ১১টি, ১৫ কেভির ১টি, ৫ কেভির ৩টি।

জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এনামুল হক প্রামাণিক ট্রান্সফরমার চুরি ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ নুরে আলম বলেন, কিছুদিন আগে ট্রান্সফরমার চোর চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আবার যে ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে, এই চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের ধরতে অভিযান চলছে।