মায়ের মৃত্যুতে আহাজারি করছে ছোট মেয়ে উম্মে আরিফা। মঙ্গলবার বিকেলে জয়পুরহাট শহরের জানিয়ার বাগান মহল্লায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি জয়পুরহাট: জয়পুরহাট শহরের একটি ফ্ল্যাট থেকে মুখে স্কচটেপ ও পেছনে হাত বাঁধা অবস্থায় এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছ পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় শহরের জানিয়ার বাগান মহল্লার রফিকুল আহসানের পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, ওই গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওই গৃহবধূ হলেন, সাজেদা ইসলাম ওরফে সাজু (৩৮)। তাঁর স্বামী হাফিজুল ইসলাম সিলেটের একটি কাগজকলে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।

নিহত সাজেদা ইসলাম |  ছবি: সংগৃহীত


পুলিশ ও নিহত নারীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে পাঁচতলার ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নেন হাফিজুল ইসলাম। তাঁর পৈতৃক বাড়ি জেলার পাঁচবিবি উপজেলার আয়মা রসুলপুর গ্রামে। হাফিজুল ইসলামের বড় মেয়ে উম্মে হাবিবা ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি সেখানেই থাকেন। ছোট মেয়ে উম্মে আরিফা এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। সে মায়ের সঙ্গে ফ্ল্যাটে থাকে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আরিফা পরীক্ষা দিতে যায়। বেলা দেড়টার পর পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ফিরে বাসার দরজা খোলা পেয়ে সে সরাসরি নিজের কক্ষে চলে যায়। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে মায়ের শয়নকক্ষে গিয়ে মুখে স্কচটেপ ও পিছ মোড়ানো হাত বাঁধা অবস্থায় মায়ে লাশ দেখতে পায়। সে প্রতিবেশীদের ডাক দেয়। পরে খবর পেলে পুলিশ বিকেল সাড়ে চারটায় লাশটি উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায়।

বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায়, আত্মীয়স্বজনেরা নির্বাক হয়ে বসে আছেন। ঘরে ছোট মেয়ে উম্মে আরিফা বিলাপ করছে। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছে বান্ধবীরা।

বিলাপ করতে করতে আরিফা বলে, ‘আমার মাকে এত কষ্ট দিয়ে মেরেছে, ইশ্‌! মা আমাকে কালকে বাইরে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। আর কখনো মাকে কাছে পাব না।’

উম্মে আরিফার দাদা এ টি এম নুরুল ইসলাম  বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা ছুটে আসেন। ফ্ল্যাট থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার খোয়া গেছে। ঘটনার পর গৃহকর্মীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওই গৃহকর্মী চার-পাঁচ দিন আগে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড, সেটি বুঝতে পারছেন না।

জয়পুরহাট সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম সারোয়ার বলেন, হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে সিআইডি, ডিবিসহ পুলিশের বিভিন্ন টিম কাজ করছে।