দৌলতদিয়ায় বিক্রি হলো পদ্মা নদীর ২৪ কেজি ওজনের আরেকটি বিপন্ন বাগাড়

২৪ কেজি ওজনের বাগাড় মাছটি বিক্রি হয়েছে ২৭ হাজার ৬০০ টাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি গোয়ালন্দ: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে আজ শুক্রবার সকালে আরেকটি বিপন্ন প্রজাতির বাগাড় মাছ বিক্রি হয়েছে। ২৪ কেজি ওজনের মাছটি সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় জেলে হজরত মণ্ডল ও কাদের মণ্ডলের জালে ধরা পড়ে। পরে বাগাড়টি স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী সোহেল মোল্লা ২৭ হাজার ৬০০ টাকায় কিনে নেন। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে ২৫ কেজি ওজনের আরেকটি বাগাড় মাছ ধরা পড়ে।

বাগাড় একটি বিপন্ন প্রজাতির মাছ। এ ধরনের মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলেও গোয়ালন্দের পদ্মা নদীতে মাঝেমধ্যেই জেলেদের জালে ধরা পড়ছে এ বিপন্ন প্রজাতির বাগাড় মাছ। আবার এ মাছ দৌলতদিয়া ঘাটেই প্রকাশ্য নিলামে বিক্রি করা হয়। স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা এ ধরনের মাছ ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের বড় ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা বা চাকরিজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিক্রি করেন।

রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের জেলেরা এ অঞ্চলে মাছ শিকার করেন। পদ্মা এবং যমুনা নদীর মিলনস্থল গোয়ালন্দ হওয়ায় অধিকাংশ বড় মাছ এখানে ধরা পড়ে। বাহির চর দৌলতদিয়া থেকে দিনে-রাতে পর্যায়ক্রমে প্রায় অর্ধশত নৌকা ছাড়ে। জেলেরা নৌকা থেকে জাল নদীতে ফেলে ভাটির দিকে ভাসতে থাকেন। কখনো ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভাটিতে যান। এরপর জাল গোটানোর সময় বড় বড় মাছ ধরা পড়ে।

স্থানীয় মৎস্যজীবীরা জানান, আজ সকালে পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে যান বাহির চর দৌলতদিয়ার ছাত্তার মেম্বার পাড়ার জেলে হজরত মণ্ডল ও কাদের মণ্ডল। নদীতে জাল ফেলে প্রায় তিন কিলোমিটার ভাটিতে যাওয়ার সময় জালে টান লাগে। তখনই জাল গুটিয়ে নৌকায় তুলে বড় বাগাড় মাছটি দেখতে পান। এরপর জাল গুটিয়ে জেলেরা চলে আসেন দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ফেরিঘাটে। সেখানে নিলাম হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ফেরিঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী মো. সোহেল মোল্লা ১ হাজার ১৫০ টাকা কেজি দরে মোট ২৭ হাজার ৬০০ টাকায় মাছটি কিনে নেন।

২০২২ সালের জানুয়ারিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিলে বাগাড় মাছকে বিপন্ন প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ সালের জানুয়ারি বিপন্ন প্রাণী ধরা বা কেনাবেচা দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের লাল তালিকায়ও রয়েছে বাগাড় মাছের নাম।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা শাহ মো. শাহারিয়ার জামান বলেন, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ছোট বাগাড় মাছ ধরা যাবে না। তবে বড় বাগাড় মাছ ধরা বা খাওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত কোনো সমস্যা নেই। বাগাড়কে বিপন্ন মাছ হিসেবে চিহ্নিত করে তা ধরতে কোনো নিষেধাজ্ঞা এখন পর্যন্ত তাঁদের কাছে আসেনি বলে তিনি দাবি করেন।