ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে আমদানি করে বাজারে সরবরাহ বাড়াতে চায় সরকার। এর ফলে দাম নিয়ে সম্প্রতি যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তা সহসাই কেটে যাবে বলে আশা করছে সরকার।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চালের জোগান বাড়াতে বড় ধরনের ক্রয় পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রায় ১৪ লাখ টন খাদ্যশস্য (চাল ও গম) কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে এসব পণ্য দেশে আনা হবে। এর মধ্যে বেশিরভাগ আমদানি করা হবে সরকারিভাবে অর্থাৎ জি-টু-জি ভিত্তিতে। কিছু আসবে উম্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে।

সূত্র জানায়, খরার কারণে এ বছর বোরো ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ কারণে আমদানি করে ঘাটতি পূরণে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

এ বছর ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ১৩ লাখ ৩০ হাজার টন খাদ্যশস্য কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৫ লাখ টন গমসহ ৮ লাখ ৩০ হাজার টন চালের দর প্রস্তাব ক্রয়কমিটির বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

অবশিষ্ট খাদ্যশস্য কেনার প্রক্রিয়া চলছে। খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র বলেছে, জি-টুজি এর ভিত্তিতে মিয়ানমার থেকে ২ লাখ টন আতপ চাল কেনার জন্য গত সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। প্রতি টন চালের দাম পড়তে পারে ৪৫৫ ডলার।

প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে আরও ২ লাখ টন সেদ্ধ চাল আনা হবে। ভারতের চালের দাম পড়বে প্রতি টন ৪৪৩ দশমিক ৫০ ডলার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খাদ্য অধিদপ্তরের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে মিয়ানমার ও ভারতের চাল দেশে ঢুকবে।

জানা যায়, উম্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১ লাখ টন চাল ও গম সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে পঞ্চাশ হাজার টন চাল এবং বাকি অর্ধেক গম। সূত্র বলেছে, চালের জন্য দরপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর এবং গমের জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর।

সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি সহজ করা হয়েছে। চালের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ২০ শতাংশ কমানো হয়েছে।

শুল্ক কমানোর পর বেসরকারিভাবে চালের নতুন চালান দেশে আসলে বাজার স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সরকারি গুদামে চালের মজুত ২০ লাখ টন। খাদ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, সরকারি গুদামে বর্তমানে যে সক্ষমতা তাতে সাড়ে ২০ লাখ টনের বেশি চাল রাখা সম্ভব নয়।

নিয়ম অনুযায়ী, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কমপক্ষে সাড়ে ১০ লাখ টন চালের মজুত থাক বাঞ্ছনীয়। সে বিবেচনায় দেশে খাদ্যের মুজত যথেষ্ট নিরাপদ বলে নিউজবাংলাকে জানান খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাখাওয়াত হোসেন।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫০ লাখ দুস্থ পরিবারকে ১৫ টাকা করে ৩০ কেজি চাল এবং খোলা বাজারে ৩০ টাকা করে এক কোটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ শুরু হয়েছে।

খাদ্যমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রতি পরিবারে চার জন করে ধরলে মোট ছয় কোটি লোক সাশ্রয়ী দামে চাল পাচ্ছে। এতে করে বাজারে চাল সহজলভ্য হবে এবং দাম কমে আসবে।