নিজস্ব প্রতিবেদক: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীকে ঘিরে ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়া ছয়টি ভুয়া ভিডিও লিংক সরানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দুটিকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা না নেওয়াসহ সরকারের দুটি সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এই নোটিশ পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আরাফাত হোসেন খান রোববার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিলুফার আনজুম ও জজ কোর্টের আইনজীবী আশরাফুল ইসলামের পক্ষে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন।
নোটিশ পাঠানো হয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিব, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) ও তার চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক, ইউটিউব, মেটা প্ল্যাটফর্মস এবং মেটার বাংলাদেশের পাবলিক পলিসিবিষয়ক প্রধান শাবনাহাজ রশিদ দিয়া বরাবর। নোটিশ প্রাপ্তির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশে উল্লেখিত লিংকগুলো সরিয়ে ফেলতে বা ব্লক করার জন্য ইউটিউব, মেটা ও মেটার বাংলাদেশের পাবলিক পলিসিপ্রধানকে বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিক্ষোভসংক্রান্ত একটি ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুক ও ইউটিউবে। যা ১১ আগস্ট রয়টার্সের ফ্যাক্ট চেক থেকে জানা যায়, ভিডিওটি ২০১৩ সালের একটি ঘটনার ভিডিও। কিন্তু ফেসবুক বা ইউটিউব কর্তৃপক্ষ ভিডিওটি সরিয়ে নেয়নি বা না নামানোর কারণ ব্যাখ্যা করেনি।
আইনজীবী আরাফাত হোসেন খান আজ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের ১০ জনকে ই–মেইল ও ডাকের মাধ্যমে নোটিশটি পাঠানো হয়েছে। আর ইউটিউব, ফেসবুক ও ফেসবুকের বাংলাদেশি প্রতিনিধিকে ই–মেইলে পাঠানো হয়েছে। ইউটিউব ও ফেসবুক গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগমাধ্যম। তাদের মাধ্যমে যেন কোনো ভুল বার্তা না প্রচারিত হয়, সেই লক্ষ্যেই এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
ফেসবুক ও ইউটিউব ব্যাপকভাবে বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। এসব প্ল্যাটফর্মে লাখ লাখ ব্যবহারকারী আছেন। এসব প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুজব ও অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। যা দেশের সংহতি, জনশৃঙ্খলা, জাতীয় নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ লঙ্ঘন করছে। ফেসবুক ও ইউটিউব সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদের অধীনের বিধান যথাযথ অনুসরণ করছে না।
এ ছাড়া বিটিআরসি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৩ ও ১৬ ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কাউকে হেয় করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো আপত্তিকর, মিথ্যা বা হুমকিমূলক তথ্য ওয়েবসাইট বা অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রেরণ, প্রকাশ বা প্রচার করা হলে বিটিআরসির চেয়ারম্যান ও ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক ফেসবুক ও ইউটিউবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবেন। কিন্তু তাঁরা তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ফেসবুক ও ইউটিউবকে বিদ্যমান বিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে প্রচারের আগে সব সংবাদ পোস্ট, ভিডিও যাচাইয়ের ব্যবস্থা ও জবাবদিহির ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।