গাছের গুঁড়ি ফেলে কৃষকদের সড়ক অবরোধ। বগুড়ার ধুনট উপজেলার ধুনট–বগুগা বাইপাস সড়কে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি ধুনট: বগুড়ার ধুনট উপজেলায় চাহিদা অনুযায়ী সার না পেয়ে সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ধুনট-বগুড়া বাইপাস সড়ক অবরোধ করে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) ধুনট ইউনিয়নের ডিলার বাইপাস সড়কের খাদ্যগুদাম এলাকার ‘মেসার্স এশিয়া এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কৃষকেরা চাহিদা অনুযায়ী সার পাচ্ছিলেন না। এ জন্য সকালে ওই প্রতিষ্ঠানের সামনে বাইপাস সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

খবর পেয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে ডিলার শামিম সরকার কৃষকদের মধ্যে সার বিক্রি শুরু করেন।

কৃষকদের অভিযোগ, তাঁরা সকালে সার নিতে এসে জানতে পারেন, চাহিদা অনুযায়ী সার দেওয়া হবে না। ৫ থেকে ১০ কেজি করে ইউরিয়া সার দেওয়া হবে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেন।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় আগস্ট মাসের জন্য ৮৯০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার বরাদ্দ আছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় একজন করে সরকারি ডিলার আছেন। বরাদ্দ পাওয়া ওই সার ডিলারদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। কৃষি কার্যালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ সকালে ধুনট সদর ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষকদের মধ্যে জমির পরিমাণ অনুযায়ী দুজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সার বিক্রির কথা ছিল। কিন্তু সার বিক্রি শুরুর আগেই মিথ্যা গুজবে ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেন কৃষকেরা।

মেসার্স এশিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক শামিম সরকার বলেন, কৃষকেরা কী পরিমাণ সার পাবেন, সেখানে ডিলারদের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। কৃষি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা যেভাবে সার দিতে বলেন, সেভাবেই দেওয়া হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জান বলেন, ধুনট ইউনিয়নের ডিলার পয়েন্ট থেকে ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু ইউনিয়নের সব ওয়ার্ড থেকে কৃষকেরা আসায় সমস্যা হয়েছিল। সারের কোনো ঘাটতি নেই। মিথ্যা গুজবে তাঁরা সড়ক অবরোধ করেছেন। নতুন বরাদ্দ পেলে এ সমস্যা থাকবে না।

ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, বিক্ষুব্ধ কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। সড়ক থেকে প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।

ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, তিন ওয়ার্ডের কৃষক ছাড়া অন্যরা আজ সার পাবেন না, এ খবর জেনে তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে কৃষকদের শান্ত করে সার বিক্রি শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব ওয়ার্ডের কৃষকদের সার দেওয়া হবে। এ ছাড়া উপজেলায় নতুন করে সার বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।