পাবনায় গৃহবধূ হত্যার দায়ে  সিফাত আলী নামের এক ব্যাক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালক। রায়ের পর সিফাত আলীকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হচ্ছে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি পাবনা: পাবনায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী হত্যার দায়ে সিফাত আলী (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মিজানুর রহমান এ রায় দেন।

সিফাত আলীর বাড়ি চাটমোহর উপজেলার ধুলাউড়ি ইউনিয়নের স্কুলপাড়া গ্রামে। ২০১৩ সালে যৌতুকের জন্য তিনি স্ত্রী নাছিমা খাতুনকে হত্যা করেন। নাছিমা খাতুন নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার ভিটাকাজিপুর গ্রামের আরদেশ প্রামাণিকের মেয়ে।

মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ইতি হোসেন বলেন, ‘রায়ে আমরা ক্ষুব্ধ। উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করি, সেখানে আসামি নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে খালাস পাবেন।’

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই সিফাত আলী যৌতুকের জন্য নাছিমার ওপর অত্যাচার চালাতেন। পরিবারের লোকজনের প্ররোচনায় স্ত্রীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন অব্যাহত রাখেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে নাছিমাকে বেদম মারধর করা হয়। একপর্যায়ে নাছিমা অচেতন হয়ে পড়লে সিফাত ও তাঁর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যান। প্রতিবেশীরা এসে মুমূর্ষু অবস্থায় নাছিমাকে উদ্ধার করে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নাছিমার বাবা আরদেশ বাদী হয়ে চাটমোহর থানায় স্বামী সিফাত ও তাঁর বাবাসহ পাঁচজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাটমোহর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম ২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারি পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। মামলা চলাকালে সিফাতের বাবা মারা যান। আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে ও নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এই রায় ঘোষণা করেন।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ কৌঁসুলি খন্দকার আবদুর রকিব বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত সিফাত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। অপর তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় সিফাত আলী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।