ঈশ্বরদী জংশন ও বাইপাস স্টেশন: যাত্রীর চাপ বাড়ছে ট্রেনে

ট্রেনের জানলা দিয়ে উঠছেন যাত্রীরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি পাবনা: জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পাবনার ঈশ্বরদীতে ট্রেনযাত্রীর সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। গত কয়েক দিন ধরেই বাংলাদেশের প্রাচীন ও বৃহত্তম ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন এবং বাইপাস রেলওয়ে স্টেশনে বেড়ে গেছে যাত্রীর আনাগোনা। গত রোববার ও সোমবার সুন্দরবন এক্সপ্রেস দ্বিগুণ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। শুধু ঢাকাগামী নয়, ঈশ্বরদী রুটে চলাচলকারী প্রত্যেক ট্রেনেই দ্বিগুণ বেড়েছে যাত্রীর চাপ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকাগামী আন্তঃনগর চিত্রা এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, ধুমকেতু এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস ট্রেনেই আসন সংখ্যার দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।

শুধু ঢাকাগামী নয়, ঈশ্বরদী-রাজশাহী, ঈশ্বরদী-খুলনা, ঈশ্বরদী-চিলাহাটি, ঈশ্বরদী-গোয়ালন্দ ঘাট রুটে চলাচলকারী আন্তনগর কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, মধুমতি এক্সপ্রেসসহ প্রত্যেক ট্রেনেই দ্বিগুণ-তিনগুণ বেড়েছে যাত্রীর চাপ।

তবে সমান তালে বেসরকারি খাতে ঈশ্বরদী-রাজশাহী, ঈশ্বরদী- চাঁপাই নবাবগঞ্জ, ঈশ্বরদী- সিরাজগঞ্জ, ঈশ্বরদী- পার্বতীপুর, ঈশ্বরদী-খুলনা মধ্যে চলাচলকারী মোহনন্দ এক্সপ্রেস, রকেট এক্সপ্রেস ও কমিউটার ট্রেনে যাত্রীর চাপ বেড়েছে আরও বেশি।

যাত্রীরা জানালেন, তেলের দাম বাড়ার কারণে বাস ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই নিরুপায় হয়ে ট্রেনেই ঢাকার দিকে রওনা করছি। কয়েকজন জানালেন, তাঁরা টিকিট পেলেও সিট পাননি, তারপরও কষ্ট করে দাঁড়িয়েই ঢাকায় যাওয়ার ৫ -৬ ঘণ্টার দূরত্ব পাড়ি দেবেন।

মূলত, ভোগান্তি এড়াতেই বাসের পরিবর্তেই ট্রেনের জন্য স্টেশনে ভিড় জমাচ্ছেন অধিকাংশ মানুষই। স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি যাত্রী নিয়ে গত দুদিন ধরে চলাচল করছে ট্রেনগুলো বলে ধারণা করছেন রেল কর্তৃপক্ষ।

ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ঢাকাগামী যাত্রী আলিফ রহমান বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাসেও ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় বাসে না গিয়ে কম টাকা দিয়ে ট্রেনে ঢাকা যাচ্ছি। জ্বালানি তেলের দাম একবারে এত টাকা বৃদ্ধি করা মোটেই ঠিক হয়নি।’ 

বাসে যাওয়া যাত্রী শাকিলা খন্দকার লিজা বলেন, ‘কয়েক দিন আগেও সনি এক্সপ্রেসের এসি বাসে ৬০০ টাকায় ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা যেতাম। আজ সেই ভাড়া নিল ৮০০ টাকা। বাস ভাড়াটা অত্যধিক বেশি হয়েছে। এত টাকা দিয়ে বাসে চলাচল করা অসম্ভব।’

রেলওয়ে জংশনে দায়িত্বে থাকা টিকিট কালেক্টর (টিসি) মেহেদী হাসান তানভীর বলেন, 'ঈশ্বরদী রেলওয়ে উত্তরবঙ্গের সব থেকে বড় জংশন। ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর বিভাগে নিয়মিত ট্রেন যাতায়াত করেন। স্বাভাবিক এর চেয়ে কিছুটা যাত্রী বেড়েছে।'

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহীদুল ইসলাম বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কিছুটা প্রভাব রেলওয়ের ওপর পড়েছে। এতে ২৫ শতাংশ যাত্রী বেশি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’