গণসংহতি আন্দোলন রাজশাহী জেলার আয়োজনে ‘গণ-সংলাপ’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন দলটির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। শনিবার রাতে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাকক্ষে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের সব ফানুস দ্রুততার সঙ্গে ফুটো হয়ে যাচ্ছে। এটা যে তাসের ছাপড়া তা খুব পরিষ্কার হয়ে গেছে।

শনিবার রাতে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।

‘বর্তমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে প্রস্তাবিত রাজনৈতিক রূপরেখার ভিত্তিতে গণসংলাপ’ শিরোনামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গণসংহতি আন্দোলন রাজশাহী জেলা।

গণসংহতি আন্দোলনের রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক মুরাদ মোর্শেদের সভাপতিত্বে গণসংলাপে উপস্থিত ছিলেন নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি এনামুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রাজশাহীর বিভাগীয় সমন্বয়ক মাহমুদ জামান কাদেরী, রাজশাহী মহানগরের সমন্বয়ক আবুল আসনাত বেগ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক আলফাজ হোসেনসহ বিভিন্ন পেশাজীবী, শ্রমজীবী, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা ও রাজশাহীর নাগরিক প্রতিনিধিরা।

গণসংলাপ অনুষ্ঠানে জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশে একটা রাজনৈতিক সংকট চলছে। এটা থেকে বের হতে না পারলে আরও গভীর সংকটের দিকে যাবে দেশ। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অর্থনৈতিক সংকট। বর্তমানে একটা দল ক্ষমতা দখল ও ব্যবহার করে যা ইচ্ছা তা-ই করছে। বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে। রাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিরা জনগণের সম্পদ দুই হাতে লুট করে নিচ্ছেন। এই লুটপাটের স্বার্থে সবার ওপর দমন-পীড়ন ও নির্যাতন নেমে এসেছে। কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

এসবের পরিণতি খুব খারাপ বলে মন্তব্য করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী। তিনি বলেন, সরকারের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার গোড়াতেই গলদ। সরকার কেবল পরিস্থিতির দোহাই দিচ্ছে। একবার বলা হচ্ছে, করোনা-উত্তরকালে অর্থনীতি এ রকম। এখন পেয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সমালোচনা করে জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশে এত দিন যে ডলার রিজার্ভের কথা বলা হতো, তা কমে যাচ্ছে। এ কারণে যেখানে খুশি সেখানে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে সরকার। শুক্রবার রাতে জ্বালানি তেলের দাম ৫০ শতাংশ বাড়ানো হলো। এর আগে সারের দাম বাড়াল। এর আগে শোনা গেল, সরকার আইএমএফের কাছ থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছে। শুধু আইএমএফের কাছে নয়, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কাছেও ঋণ চেয়েছে। এটা সবার জানা যে আইএমএফ ঋণ দিলে কিছু শর্ত দেবে। কিন্তু সরকারের চিন্তা করতে হবে, দেশের জনগণ কীভাবে বাঁচবে। আইএমএফ তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়টা নিশ্চিত করে ঋণ দিতে চায়। এখন আইএমএফ যদি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পলিসি ঠিক করে দেয়, তাহলে দেশে তো সরকারের দরকার নেই।

বাংলাদেশে একটা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দরকার বলে মনে করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী। তিনি বলেন, এটা হবে একটা জবাবদিহিপূর্ণ সরকার। যারা ক্ষমতায় গিয়ে পুরো রাষ্ট্রকে পকেটে ঢুকিয়ে ফেলতে পারবে না; বরং জনগণের অধিকারটুকু মেনে ক্ষমতায় যাবে ও থাকবে।