অস্ত্রোপচার ছাড়াই একই মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়া তিন নবজাতক। শনিবার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

প্রতিনিধি রাজশাহী: অস্ত্রোপচার ছাড়াই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক গৃহবধূ। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে তিন মেয়ে নবজাতক ভূমিষ্ঠ হয়। মা ও তিন নবজাতক সুস্থ রয়েছে। তিন কন্যার মা হয়ে ব্যাপক খুশি বলে জানিয়েছেন মা নাজমুন্নাহার (২২)।

নাজমুন্নাহার প্রথম মা হলেন। তাঁর বাবার বাড়ি রাজশাহীতে। স্বামীর বাড়ি নওগাঁ সদরে। তাঁর স্বামী তোফায়েল আহমেদের নওগাঁয় একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্র রয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে তোফায়েল আহমেদ হাসপাতালে তিন কন্যার শয্যার পাশে হাসিমুখে বসে ছিলেন। তিনি বলেন, দুই মাস আগে তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পেট অস্বাভাবিক বড় দেখাচ্ছিল। তখনই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শে আলট্রাসনোগ্রাম করে নিশ্চিত হন, তাঁর স্ত্রীর পেটে একসঙ্গে তিনটি শিশু রয়েছে। তখন থেকেই তিনি স্ত্রীর বিশেষ যত্ন নেওয়া শুরু করেন।

সমস্যা দেখা দেওয়ায় গত ৩১ জুলাই স্ত্রীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন তোফায়েল। কিন্তু চিকিৎসক সেদিনই আবার ছুটি দিয়েছিলেন। বাসায় যাওয়ার পরে আবার সমস্যা দেখা দেয়। ১ আগস্ট আবার হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁদের প্রথম সন্তানটি ভূমিষ্ঠ হয়। পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বাকি দুই সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। তিনি বলেন, অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই তিন সন্তানের জন্ম হয়েছে।

তিন নাতনির সঙ্গে হাসপাতালে তাদের দাদি ও নানি। শনিবার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

আজ দুপুরে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, তিন নবজাতককে আলাদা বেডে সারি করে শুইয়ে রাখা হয়েছে। তাদের এক পাশে দাদি ও আরেক পাশে নানি হাসিমুখে বসে রয়েছেন। তাঁরা তিন নাতনির বিষয়ে মজার আলাপে মগ্ন ছিলেন।

কী নাম রাখা হয়েছে, জানতে চাইলে তিন কন্যার বাবা তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাড়িতে গিয়ে বইপুস্তক দেখে তিন মেয়ের নাম রাখবেন। তিনি বলেন, যেহেতু কোনো সমস্যা নেই, তাই চিকিৎসক কাল রোববার তাঁদের রিলিজ দিতে পারেন।

নাজমুন্নাহারকে হাসপাতালের আলাদা একটি শয্যায় রাখা হয়েছে। তিনি হাসিমুখে কথা বলছেন। তিনি বললেন, সন্তানদের বুকের দুধ ঠিকমতো দিতে পারছেন না। তিন মেয়ের পেট ভরছে না। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কৌটার দুধ (ফর্মুলা দুধ) খাওয়াচ্ছেন। পাশাপাশি শুইয়ে রাখা ফুটফুটে তিনি নবজাতকের কোনো কান্নাকাটি নেই। তারা চুপচাপ শুয়ে আছে। বেশির ভাগ সময় ঘুমিয়েই কাটাচ্ছে।