চীনের বিরোধিতা সত্ত্বেও তাইওয়ান সফর করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি | ছবি: রয়টার্স
পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর ঘিরে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এ সফরের প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ানের চারপাশে সামরিক মহড়া চালানোর ঘোষণা দিয়েছে চীন। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের
স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টা ৪৪ মিনিটে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি বিমানে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে তাইপে পৌঁছান পেলোসি। এর ঠিক ১৬ মিনিট পর চীন সামরিক মহড়া শুরুর ঘোষণা দেয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাইওয়ানের চারপাশের জলসীমায় বড় পরিসরে সামরিক মহড়া চালানো হবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া বিমান ও নৌ মহড়া চলবে তিন দিন।
সামরিক মহড়া চলাকালে ওই এলাকায় বিদেশি জাহাজ ও বিমান প্রবেশ না করাতে বলেছে বেইজিং। বিশ্ববাণিজ্যে তাইওয়ান ও এর আশপাশের জলসীমা গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুট। চীনের এমন পদক্ষেপকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন’ বলেছে তাইওয়ান।
এ ছাড়া পেলোসির সফরের প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ান থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে চীন। তাইওয়ানের শতাধিক খাবারের ব্যবসার ওপর আরোপ করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তাইওয়ানের স্বাধীনতাসংগ্রামে যুক্ত দুটি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে বেইজিং। সেই সঙ্গে বেইজিংয়ে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকোলাস বার্নসকে তলব করেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে হঠাৎ তাইওয়ান যান পেলোসি। কেননা, তাঁর সফরসূচিতে তাইপে ছিল না। যদিও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো আগে থেকেই পেলোসির তাইপে সফরের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিল। সফরকালে পেলোসি তাইপের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে ওঠেন। তাঁর সফরের বিরোধিতা করে হোটেলের বাইরে চীনপন্থী লোকজন বিক্ষোভ করেছেন।
পেলোসির সফর ঘিরে তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলের জলসীমায় একটি যুদ্ধবিমানবাহী রণতরিসহ চারটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে চীন। আকাশে চক্কর দেয় চীনা যুদ্ধবিমান। সফর শেষে আজ বুধবার তাইপে ছেড়েছেন পেলোসি। তাঁর পরের গন্তব্য দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান।
এর আগে আজ সকালে পেলোসি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় পেলোসি বলেন, ‘আজ আমাদের প্রতিনিধিদল তাইওয়ানে এসেছে দ্ব্যর্থহীনভাবে এটা স্পষ্ট করে দিতে যে আমরা তাইওয়ানের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি ত্যাগ করব না। আমিও এই প্রতিনিধিদলের একজন গর্বিত সদস্য। আমরা আমাদের স্থায়ী বন্ধুত্বের জন্য গর্বিত।’
তিনি বলেন, ‘এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সংহতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর আমরা আজ সেই বার্তাটিই এখানে নিয়ে এসেছি।’