সরকারি সাঁড়া মাড়োয়ারী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান ফটক | ফাইল ছবি |
প্রতিনিধি পাবনা: পাবনার ঈশ্বরদীতে শত বছরের আলো ছড়ানো ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সরকারি সাঁড়া মাড়োয়ারী মডেল স্কুল এন্ড কলেজ ক্যাম্পাসে দিন দিন বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়েই চলছে। ইতোমধ্যে বহিরাগতরা কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতিনিয়ত নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন তাঁরা।
জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ থেকে শুরু করে কলেজ ভবন এলাকা সর্বত্রই বহিরাগতদের অবাধ চলাফেরা। এতে ক্যাম্পাসে ইভটিজিং, মাদক সেবন, মোবাইল ছিনতাইসহ নানা অপ্রীতিকর ঘটনা বেড়েই চলছে। গত ১৩ই ডিসেম্বর প্রেম ও কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক মেধাবী ছাত্রীর উপর হামলা চালিয়ে তাঁর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছিলো।
স্কুল ও কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাতের বেলায় এমনকি দিনেও বাবুপাড়া শিশু বাগান এলাকায় নিয়মিত বসে মাদকের আসর। এ ছাড়াও, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে উচ্চ গতিতে বহিরাগতদের মোটরসাইকেল চালনো লক্ষ করা গেছে।
অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, বহিরাগত প্রেমিক যুগলসহ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা লিপ্ত হচ্ছে বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে, যা শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করছে।
কলেজ শাখার এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে আসবে, ঘুরবে, আড্ডা দেবে, এখান থেকে তারা শিখবে কিন্তু সেটা না করে যদি উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরা করে, নেশা করে, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে, প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট করে, এটা অন্যায়। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের আরও কঠোর হওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে কলেজের সহকারী অধ্যাপক শহিদুল হল শাহিন বলেন, 'ক্লাস এবং অন্যান্য একাডেমিক কাজ থাকায় শতভাগ সমাধান সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের সাথে ছাত্রদেরও চেষ্টা করা উচিৎ যাতে বহিরাগতরা অবাধে বিচরণ করতে না পারে।'
বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আয়নুল ইসলাম বলেন, 'ক্যাম্পাস উন্মুক্ত থাকার কারণে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়, যাতে বহিরাগত বখাটেরা কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।'
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, 'স্কুল-কলেজ চলাকালীন সময়ে কোন বহিরাগত প্রবেশের সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীরা যেন নির্ভয়ে স্কুল-কলেজে যেতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, 'আমরা ইভটিজিং বন্ধে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করছি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে অযথা ঘুরাফেরা করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'