তালাবদ্ধ ছিল স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খাঁনের কক্ষ। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বারান্দায় চেয়ার নিয়ে একাই বসে থাকেন এমপি। ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোববার সকালে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
প্রতিনিধি পাবনা: পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়া) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস হঠাৎ ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে যান। তাকে দেখামাত্র কিছু ব্যক্তি দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে জানা যায় তারা বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি।
রোববার সকালে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে জরুরি বিভাগের সামনে এমপিকে দেখে দৌড়ে পালিয়ে যান তারা। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খাঁন হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। তালাবদ্ধ ছিল স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খাঁনের কক্ষ। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বারান্দায় চেয়ার নিয়ে একাই বসে থাকেন এমপি।
এমপির সঙ্গে এ সময় ঈশ্বরদী পৌর সভার মেয়র মো. ইছাক আলি মালিথা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নায়েব আলী বিশ্বাস, ঈশ্বরদীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহসিন কবীর ও ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
হাসপাতালের একাধিক সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের রোগী হয়রানি, দালালদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি, হাসপাতালে অভ্যন্তরে অস্থায়ী অ্যাম্বুলেন্স গ্যারেজ মাদক সেবনের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অন্যদের নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন এমপি নুরুজ্জামান বিশ্বাস।
জানা যায়, কাউকে না জানিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করতেই জরুরি বিভাগের সামনে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিড় দেখে এগিয়ে যান এমপি। ‘তোমরা কারা’ জিজ্ঞাসা করতেই দৌড়ে পালিয়ে যান প্রতিনিধিরা। এরপর স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষ বন্ধ পেয়ে তিনি বারান্দায় চেয়ার নিয়ে বসে পড়েন। এ সময় উপস্থিত অন্যান্য কর্মকর্তা ও ভুক্তভোগীরা এমপিকে কাছে পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, হয়রানি, মাদক সেবনের অভিযোগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন এমপি। হাসপাতালে চত্বরে মাদকসেবীদের আনাগোনা বন্ধে ওসিকে কঠোর নির্দেশনাও প্রদান করেন তিনি।
এমপি নুরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালের বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ পেয়ে সরেজমিন তদন্তের জন্য কাউকে কিছু না বলে সেখানে গিয়ে হাতেনাতে সব প্রমাণ পেয়েছি। এ বিষয়ে সংশোধন হওয়ার জন্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খাঁন বলেন, ‘এমপি স্যার কিছু না জানিয়ে হাসপাতালে আসায় সামান্য সমস্যা হয়েছিল, পরে ঠিক হয়েছে। হাসপাতালের উন্নয়নের বিষয়ে তিনি (এমপি) দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।