বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান | ছবি: সংগৃহীত  

ক্রীড়া প্রতিবেদক: বাংলাদেশ দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের বেছে বেছে খেলার ইচ্ছাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। কেউ যদি কোনো সংস্করণে খেলতে না চান, সে ক্ষেত্রে বোর্ড থেকে খেলার চাপ দেওয়া হবে না। তবে কোন ক্রিকেটার কোন সংস্করণে খেলতে চান, সেই সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলে ক্রিকেট বোর্ডও বসে থাকবে না। নাজমুল হাসানের কথায় আভাস, দলের স্বার্থে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের ছাড়াই এগিয়ে যেতে প্রস্তুত বিসিবি।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ সামনে রেখে আজ রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় দলের কোচিং স্টাফ ও টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকের সঙ্গে সভায় বসেছিলেন নাজমুল হাসান। সভা শেষে সাংবাদিকের তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো টেস্ট খেলোয়াড়কে দেখবেন টি-টোয়েন্টিতে মনোনিবেশ করেছে, টেস্টে ওরকম পারফরম্যান্স হয়নি, এরপর আস্তে আস্তে সরে এসেছে। এটা খুবই স্বাভাবিক। আমি সমস্যার কিছু দেখছি না। আমরা চাই না, আমাদের খেলোয়াড়েরা মন খারাপ করুক। তারা হাসিমুখে খেলুক, নিজেরা সিদ্ধান্ত নিক। যত তাড়াতাড়ি তারা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, তত ভালো। যদি সিদ্ধান্ত না নেয়, একটা সময় আমাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

এ ক্ষেত্রে মাহমুদউল্লাহ ও তামিমের উদাহরণ টেনেছেন নাজমুল হাসান। গত বছর সাদা বলে মনোযোগী হতে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তামিম ইকবাল খেলছেন না টি-টোয়েন্টি। মুশফিকুর রহিম এখন পর্যন্ত তিন সংস্করণেই খেলছেন। সাকিব আল হাসানও বিরতি দিয়ে হলেও খেলছেন সব সংস্করণেই। এ অলরাউন্ডারের বিকল্পও নেই বাংলাদেশ দলে। সাকিবের বিষয়টা তাই বিসিবিও দেখছে একটু আলাদাভাবে।

নাজমুল হাসান বলছিলেন, ‘সাকিবের সঙ্গে ওদের কারও মিল নেই। সব সংস্করণের দলেই সবাই তাকে চায়। কিন্তু আমরা জানি না, সাকিব কোনটা খেলবে, কোনটা খেলবে না। যখন ওর সঙ্গে কথা বলি, আমার মনে হয় ও সবই খেলতে চায়। আবার যখন খেলা আসে, দেখা যায় কোনো না কোনো সমস্যা থাকে।’ 

বিসিবি সভাপতি তাই সিদ্ধান্তটা ছেড়ে দিয়েছেন খেলোয়াড়দের ওপরই, ‘আমি মনে করি, এই সিদ্ধান্ত খেলোয়াড়রা নিতে পারলেই ভালো। সংবাদমাধ্যমে না বলে বোর্ডের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিলেই ভালো হয়। বাইরের দেশে তা-ই হয়।’

সম্প্রতি মোস্তাফিজুর রহমানের টেস্ট না খেলা নিয়েও বেশ আলোচনা হচ্ছে। লাল বলের বর্তমান কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নেই এ বাঁহাতি পেসারের নাম। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলাম চোটে পড়ায় টেস্টে পেসার–সংকটে পড়েছিল বাংলাদেশ দল। আইপিএলের জন্য ছুটিতে থাকা মোস্তাফিজের জন্য তখন থেকেই টিম ম্যানেজমেন্টের হাহাকার।

মোস্তাফিজ প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি বলেছেন, ‘কোনো খেলোয়াড় যেমন বেছে বেছে খেলতে চাইতে পারে, তেমনি আমরাও ইচ্ছা করলে যে কাউকে খেলাতে পারি, আবার না-ও খেলাতে পারি। সবাইকে খেলাতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। তবে আমার মনে হয়, এখন যারা খেলছে, তাদের মধ্যে এমন কোনো খেলোয়াড় নেই, যাকে দেশের প্রয়োজনে বললে খেলবে না। তারপরও কেউ ব্যতিক্রম হলে আমার ধারণা ভুল।’

কোচ ও টেস্ট অধিনায়কের সঙ্গে বোর্ড সভাপতির বৈঠকে টেস্ট দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় কোচ-অধিনায়ক নাকি এমনও বলেছেন, দলের অনেক ক্রিকেটারের পরপর দুই টেস্টে ভালো খেলার ধারাবাহিকতা ধরে রাখার মানসিকতাই নেই। নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘ওরা (কোচ ও অধিনায়ক) মনে করে, একটা সিরিজে ১০ দিন খেলার মানসিকতাই নেই অনেকের। কোচিং স্টাফরা আমাকে গত ৪-৫টা টেস্ট ম্যাচের উদাহরণ দিয়েছেন। এটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’