প্রতীকী ছবি |  ছবি: রয়টার্স

বাণিজ্য ডেস্ক: রাশিয়ার গ্যাস যে কত গুরুত্বপূর্ণ, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে ইউরোপ। ইউক্রেনের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ার পর পশ্চিমারা রাশিয়ার তেল ও গ্যাসে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া বলেছিল, গ্যাস নিতে হলে রুবলে মূল্য পরিশোধ করতে হবে। এত দিন তাতে কেউ গা না করলেও এবার এক জার্মান কোম্পানি বলেছে, তারা রুবলে গ্যাস কিনবে।

তবে এই কেনাবেচা সরাসরি রুবলে হবে না। ইউনিপার নামের এই কোম্পানি বলেছে, তারা ইউরোতেই গ্যাসের মূল্য পরিশোধ করবে, যা আবার রুবলে রূপান্তরিত হবে। শুধু ইউনিপার নয়, ইউরোপের অন্যান্য জ্বালানি কোম্পানিও এ পথে হাঁটার চিন্তা করছে বলে জানা গেছে। খবর বিবিসির।

ইউনিপারের এ সিদ্ধান্তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। তবে ইউনিপার বলেছে, এতে নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘিত হচ্ছে না। তাদের এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন না করে কীভাবে মুদ্রা রূপান্তর করা যায়, আমরা সেই চেষ্টা করছি।’

ইউনিপার বলেছে, রাশিয়ার গ্যাস ছাড়া স্বল্প মেয়াদে তাদের পক্ষে চলাই সম্ভব নয়। অর্থনীতিতে এর নাটকীয় প্রভাব পড়বে।
গত মাসে রাশিয়া ঘোষণা করে, অবন্ধুসুলভ রাষ্ট্রগুলোকে তাদের কাছ থেকে তেল-গ্যাস কিনতে হলে রুবলে মূল্য পরিশোধ করতে হবে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে নিজেদের মুদ্রা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে রাশিয়া এ ব্যবস্থা নেয়।

মূল বিষয় হলো, রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি না হলে জার্মানি মন্দার কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত শুক্রবার জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ-ও বলেছে, মন্দার কবলে পড়লেও তা ২০২০ সালের মতো হবে না। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার গ্যাসের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন দ্রুত নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথে হাঁটছে। আর সেটি হলে এ বছর জার্মানির ১৬৫ বিলিয়ন বা ১৬ হাজার ৫০০ কোটি ইউরোর সমপরিমাণ উৎপাদন কমতে পারে বলে মনে করছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে ২০২১ সালের তুলনায় জার্মানির মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশ কমে যেতে পারে।

ইউরোপের গ্যাসের ৪০ শতাংশই আসে রাশিয়া থেকে। এটা একটা পরিসংখ্যানমাত্র, কিন্তু বাস্তবতা হলো, অনেক দেশের পক্ষে রাশিয়ার গ্যাস ছাড়া চলাই সম্ভব নয়। এর মধ্যে ব্রিটেনসহ অনেক দেশেই মূল্যস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে। এখন রাশিয়া থেকে ইউরোপ গ্যাস না নিলে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাবে। আবার এ সময় তাদের পক্ষে গ্যাসের নতুন উৎস খুঁজে বের করাও সম্ভব নয়। জানা গেছে, এ পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় দেশগুলো বেনামে রাশিয়ার গ্যাস কিনছে।