হাইকোর্ট ভবন | ফাইল ছবি |
নিজস্ব প্রতিবেদক: পাবনার ইছামতী নদীর জায়গা নিজেদের দাবি করে ঢাকার চার নদী নিয়ে ২০০৯ সালে দেওয়া রায় সংশোধন চেয়ে ৪৩ ব্যক্তির করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাঁদের দখল ও অবস্থানের ওপর আগে দেওয়া স্থিতাবস্থাও তুলে নেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ সিদ্ধান্ত দেন। ফলে ইছামতী নদীর সীমানায় ওই ৪৩ ব্যক্তির থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
আদালতে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রিপন বাড়ৈ ও সঞ্জয় মণ্ডল। ৪৩ ব্যক্তির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক ও রওশন আলম খান। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এন এম আহসানুল হক।
পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, পাবনার ইছামতী নদীর তীরে চারটি মৌজায় নদীর সীমানায় থাকা স্থাপনাগুলো উচ্ছেদে জেলা প্রশাসন নোটিশ দিলে ৪৩ ব্যক্তি ২০২০ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট এ বিষয়ে নদী কমিশনকে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন। পরে নদী কমিশন প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে এসেছে, আবেদনকারী ৪৩ ব্যক্তির দখলে থাকা জায়গা সিএস রেকর্ড অনুসারে ইছামতী নদীর জায়গা। এ নিয়ে রিট করে কোনো আদেশ না পেয়ে তাঁরা চার নদী নিয়ে মামলার (৩৫০৩/২০০৯) রায় সংশোধন চেয়ে আবেদন করেন।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, শুনানি শেষে আজ রোববার হাইকোর্ট রায় দেন। ওই আবেদন খারিজ করে আগে দেওয়া স্থিতাবস্থাও তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে ৪৩ ব্যক্তির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা নেই।
ঢাকার আশপাশে থাকা বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা—এই চার নদ–নদীর দূষণ, অবৈধ দখল ও নদীগুলোর ভেতরে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের বৈধতা নিয়ে এইচআরপিবির পক্ষে ২০০৯ সালে হাইকোর্টে রিট করা হয়। চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে একই বছরের ২৪ ও ২৫ জুন হাইকোর্ট নির্দেশনাসহ রায় দেন।
নির্দেশনায় সময়সীমা বেঁধে দিয়ে সিএস ও আরএস ম্যাপ অনুসারে নদ–নদীগুলোর সীমানা জরিপ করা, সেগুলোকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন ঘোষণা, নদীগুলো রক্ষায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রণয়ন, সীমানা পিলার স্থাপন, নদীর সীমানায় ওয়াকওয়ে নির্মাণ বা বৃক্ষরোপণ করতে বলা হয়।