ট্যুরিস্ট বাসের মাধ্যমে পর্যটকেরা পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারসহ চারটি পর্যটনকেন্দ্রঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি নওগাঁ: ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ভরা উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে প্রায় অর্ধশতাধিক ঐতিহাসিক স্থাপনা। পর্যটকদের পক্ষে ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় এক দিনে একাধিক ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখা সম্ভব নয়। তাই স্বল্প খরচে এক দিনে একাধিক ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ভ্রমণের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই প্রথম ট্যুরিস্ট বাস সেবা চালু হতে যাচ্ছে।

ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন আনুষ্ঠানিকভাবে ট্যুরিস্ট বাস উদ্বোধন করা হবে। তবে ঈদের আগেই টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় নওগাঁ জেলা বাসমালিক সমিতির পক্ষ থেকে একটি বাস প্রস্তুত করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেল সূত্রে জানা যায়, নওগাঁর ইতিহাসে এই প্রথম ট্যুরিস্ট বাস সার্ভিসের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। নওগাঁর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোকে সারা দেশসহ বিশ্বের পর্যটকদের কাছে নতুন করে তুলে ধরতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদ্বোধনের পর ৪০ আসনের ট্যুরিস্ট বাস শহরের মুক্তির মোড় থেকে প্রতিদিন সকাল নয়টায় যাত্রা শুরু করবে। মুক্তির মোড়ের পদ্মা বাস কাউন্টার থেকে এ প্যাকেজের টিকিট পাওয়া যাবে।

প্রাথমিকভাবে ট্যুরিস্ট ভ্রমণের জন্য ৪৫০ টাকায় একটি প্যাকেজ প্রস্তুত করা হয়েছে। এই প্যাকেজের মাধ্যমে একজন পর্যটক সহজেই ভারত সীমান্তঘেঁষা উপজেলা ধামইরহাটের জাতীয় উদ্যান শালবন বিহারের আলতাদীঘি উদ্যান, ঐতিহাসিক জগদ্দল বিহার, বদলগাছী উপজেলার ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার ও হলুদ বিহার ভ্রমণ করতে পারবেন।

এ ছাড়া প্যাকেজের ভেতরেই পর্যটকেরা সকাল ও বিকেলের নাশতা এবং দুপুরের খাবার পাবেন। বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে থাকবে প্রতিবার বিকেলে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে স্থানীয় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরপর হলুদ বিহার দর্শন শেষে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে এসে ওইদিনের ভ্রমণ শেষ হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, ট্যুরিস্ট বাসসেবা চালুর কারণে পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় বেশি বেশি পর্যটকদের আগমনের কারণে ওই এলাকাগুলোর আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে নতুন নতুন স্থাপনা গড়ে উঠবে। স্থানীয় ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সামগ্রিকভাবে স্থানীয় মানুষের জীবন যাপনের মানও বদলে যাবে। এ ছাড়া এই সেবা চালুর মাধ্যমে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানসমূহে দর্শনার্থী বাড়লে সরকারের বাড়তি রাজস্ব আয় হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক পর্যায়ে চারটি ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের রুট হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে পর্যটকদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে কুসুম্বা মসজিদ, দিব্যক জয়স্তম্ভ (দিবর দীঘি), পতিসরে রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি, দুবলহাটি ও বলিহার রাজবাড়ির মতো জেলার অন্য ঐতিহাসিক স্থানগুলোতেও ভ্রমণের প্যাকেজ তৈরি করা হবে।