নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চলনবিলের বিলশা মাঠ থেকে আগামজাতের বোরো ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছেন কৃষকেরা। গত বুধবার দুপুরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চলনবিলে বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে। কৃষকদের পরিবারের সদস্যরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবহাওয়া ভালো থাকায় অনেক সহজে নতুন ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন কৃষক। বাজারে ধানের ভালো দামও পাচ্ছেন তাঁরা।
উপজেলা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫৭ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলায় আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। এবার উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ব্রি-২৮, ব্রি-২৯, ব্রি- ৮১ ও ব্রি- ৮৯ জাতের ধান চাষ বেশি হয়েছে। ইতিমধ্যে আগাম জাতের (জিরা) প্রায় ৩০০ হেক্টর খেতের ধান কাটা শেষ হয়েছে। মাঝে সেচের পানির সংকট দেখা দিলেও ফলনে এর প্রভাব পড়েনি। বিঘাপ্রতি ২৪ থেকে ২৫ মণ ধান হচ্ছে।
ধান চাষিরা বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে সেচসংকট দেখা দিলেও উপজেলার আত্রাই নদের রাবারড্যামের কারণে বিপর্যয় দেখা দেয়নি। সার-কীটনাশক সময়মতো পেয়েছেন। ধানে রোগবালাইয়ের আক্রমণ ছিল না বললেই চলে। চলনবিলবেষ্টিত গ্রাম উপজেলার বিলশা ও রুহাইগ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, বিঘাপ্রতি ২৪ থেকে ২৫ মণ ধান পেয়েছেন তাঁরা। পক্ষান্তরে এক বিঘা জমিতে উৎপাদন খরচ হয়েছে গড়ে ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। ১ হাজার ১০০ টাকা মণদরে ধান বিক্রি করতে পারছেন তাঁরা। খরচ বাদে ধান বিক্রি করে বিঘাপ্রতি লাভ হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। এতে নতুন আশা দেখছেন চলনবিলের কৃষকেরা।
তবে নাবি জাতের ধান নিয়ে চিন্তায় আছেন কৃষকেরা। এসব ধান এখন সোনালি রং ধারণ করেছে। ধান কাটতে এখনো দুই থেকে তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে চাষিদের। বৈশাখীর তাণ্ডব আর উজানের ঢলের পানিতে এসব ধানখেত তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
গত বুধবার বিলশা গ্রামের কৃষক ফিরোজ হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর শ্রমিকসংকটের কারণে বিপাকে পড়েছিলেন এলাকার অনেক চাষি। এ বছর সব জমির ধান একসঙ্গে কাটা শুরু না হওয়া এবং কৃষি দপ্তর থেকে ধান কাটার মেশিন সরবরাহ করায় কৃষিশ্রমিকের সংকট কম। অনেকটা নির্বিঘ্নে খেতের ধান এবার ঘরে তুলতে পারছেন তাঁরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশীদ বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগেই কৃষকের ধান ঘরে তুলতে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে তাঁর দপ্তর থেকে।