ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব হান্ড্রেডস- কনসার্টে সংগীতজ্ঞ এ আর রাহমান | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ৪৫ মিনিটের বৃষ্টিতে খানিকটা ছন্দপতন। ফের সুরের জাদুতে মোহাবিষ্ট হওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এরপর চলে শেষ মুহূর্তের সাউন্ডচেক। এ সময় আবার মঞ্চে ‍মেয়েকে নিয়ে উঠে আসেন ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ। ‘পাঙ্খা’ ও ‘লোকাল বাস’ গেয়ে উদ্বেলিত করেন দর্শকদের। অতঃপর প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে মঞ্চে উঠে আসেন মোৎজার্ট অব মাদ্রাজ অস্কারজয়ী এ আর রাহমান।

সংস্কৃতিমনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ধ্যা থেকেই সশরীরে রয়েছেন। উপভোগ করছেন দেশি ও ভারতীয় শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা।

মঞ্চে এসে শুরুতেই ‘জয় হো’ দিয়ে শুরু করেন তিনি। এরপরই দর্শক মেতে ওঠে ‘মুককালা মোকাবেলা’র সেই চিরচেনা মেলোডি আর রিদমের ইন্দ্রজালে। পুরো গ্যালারি গলায় মেলায়, ‘ওলেও.. ওলে ও ও’। এরপর বেনি দয়ালের কণ্ঠে শোনা যায় ‘রাঙদে বাসন্তি’। এরপরই নব্বইর দশকের কিশোরদের নস্টালজিক করে হরিহরন গাইতে শুরু করেন ‘সপনে’ ছবির ‘চান্দারে চান্দারে’।

এরপর শুরু হয় ’৯৮-থেকে আজ অবধি কানে ঝড় তোলা ‘দিল সে রে..’ । রাহমানের কণ্ঠে দর্শকরাও গলা মেলান, ‘প্রিয়া প্রিয়া জিয়া জিয়া’। বম্বে সিনেমার জন্য রাহমানের সিগনেচার গান ‘তুহি রে’ গেয়ে হরিহরণ আবার ঝড় তুললেন কনসার্টের যাবতীয় প্রেমিক হৃদয়ে। এরপর হারমোনিয়াম নিয়ে বসে পড়েন রাহমান ও অন্য বাদ্যযন্ত্রীরা। পরিবেশন করেন কাওয়ালি ‘মাস্ত কালান্দার’ ও রকস্টার ছবির ‘কুন ফায়া কুন’।

এরপর বিখ্যাত ড্রামার শিবাজি মঞ্চে উঠতেই পুরো স্টেডিয়াম কেঁপে ওঠে দর্শকদের হর্ষধ্বণিতে। পানির জার থেকে শুরু করে বিচিত্র সব অণুষঙ্গ ব্যবহারে সিদ্ধহস্ত শিবাজি। দর্শক-শ্রোতারাও তাতে সাড়া দিয়েছেন বেশ।

জোনিতা গান্ধি ‘কেহনা হি কেয়া’ বলে টান দিতেই মঞ্চের আবহ বদলে যায় সঙ্গে সঙ্গে। কঠিন এ গানে নৃত্যশিল্পীরাও দাবি রেখেছেন প্রশংসার। এরপরই তুমুল জনপ্রিয় ‘আগার তুম সাথ হো’ গাইতেই গ্যালারিজুড়ে নেমে আসে মুগ্ধতার নীরবতা।

এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এ আর রাহমান। বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়ে বলেন ‘জয় বাংলা’।

হাজারো দর্শককে অশ্রুসজল করে দিলেন ‘জয় বাংলা জয় বাংলা জয় বাংলাদেশ’ গেয়ে। রাহমানের সুর করা গানটি লিখেছেন গীতিকবি জুলফিকার রাসেল। এ সময় প্রেসিডেন্ট বক্স থেকে মুগ্ধশ্রোতা হয়ে শোনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তাকে গানটি ভিডিও করতেও দেখা যায়। 

এ গানটির পর পরই ‘আমার সোনার বাংলা... বলো জয় বঙ্গবন্ধু, বলো জয় বাংলা... এক দোস্ত মুজিব হে দিল মে...’ গান এ আর রহমান। 

‘লুকাচুপি বহত হুয়ি’ গানটিতে প্রয়াত লতা মঙ্গেশকরের রেকর্ডেড অংশের সঙ্গে লাইভে কণ্ঠ মেলান এ আর রাহমান। কনসার্টে এমন অনন্য পরিবেশনা আর কেউ কখনও দেখেছে কিনা সে প্রশ্ন তোলাই যায়। 

এর আগে, অস্কারজয়ী এ আর রাহমান সোমবার সন্ধ্যায় মিরপুরে স্টেডিয়ামে গিয়ে 'ক্রিকেট সেলিব্রেট মুজিব ১০০' অনুষ্ঠানের জন্য ঝালিয়ে নিয়েছিলেন নিজেকে। কনসার্টে অংশ নিতে রবিবারেই শতাধিক সফরসঙ্গী নিয়ে তিনি আসেন ঢাকায়।

অনুষ্ঠানের প্রথম স্লটে পারফর্ম করেছেন মমতাজ ও মাইলস। অনুষ্ঠানটি লাইভ দেখাচ্ছিল দেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল। এরপর মঞ্চে আসেন রাহমান। 

ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব হান্ড্রেডস- কনসার্টে সংগীতজ্ঞ এ আর রাহমান | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন